Tuna's Mini Aviary

Tuna's Mini Aviary Cage Bird & accessories are available here �

08/01/2024

যে ব্যক্তি যালিমকে যালিম বলে জেনেও তাকে শক্তিশালী করার উদ্দেশ্যে অগ্রসর হবে,সে ইসলাম হতে বের হয়ে যাবে... (বায়হাকী)

20/12/2023
Our Official logo ❤️
20/12/2023

Our Official logo ❤️

বাজরিগার পাখির খাবার তালিকা বাজরিগার একটি বহুল প্রচলিত খাঁচায় পালনের জন্য পাখি। এটা প্রায় ৭ থেকে ৮ ইঞ্চি পর্যন্ত (লেজ সহ...
22/11/2023

বাজরিগার পাখির খাবার তালিকা

বাজরিগার একটি বহুল প্রচলিত খাঁচায় পালনের জন্য পাখি। এটা প্রায় ৭ থেকে ৮ ইঞ্চি পর্যন্ত (লেজ সহ) হয়। দাম কম এবং সহজলভ্য হওয়ায় অনেকেই এই পাখি পালন করেন। কিন্তু সুস্থ্য পাখির জন্য পুস্টিকর খাবার খুবই জরুরী। আজকে আমরা এই পাখির প্রতিদিনের খাবারের তালিকায় কি কি থাকবে, সেটা উল্ল্যেখ করার চেষ্টা করেছি। রেসিপি-টি অন্যান্য পাখির ক্ষেত্রেও প্রযোজ্য।
দেখে নেই তালিকা গুলো কি কি?

বাজরিগার শাক জাতীয় খাবার
১. নিম পাতা
২. ফুলকপি
৩. পাতাকপি
৪. পুই শাক
৫. কলমি শাক
৬. লাল শাক
৭. লেটুস পাতা
৮. সাজনা পাতা
৯. পালং শাক (কম পরিমাণে)
১০. ধনিয়া পাতা
১১. মেহেদি পাতা
১২. বরবটি
১৩. মুলা শাক
১৪. থানকুনি পাতা
১৫. মিষ্টি কুমড়া

বাজরিগার ফল জাতীয় খাবার

১. গাজর
২. আপেল (বীজ যেন না থাকে)
৩. কমলা
৪. শসা
৫. কলা
৬. কালো জাম
৭. আংগুর
৮. আম
৯. তরমুজ
১০. পেয়ারা
১১. স্ট্রবেরি
১২. মিষ্টি আলু
১৩. নারকেল
১৪. খেজুর
১৫. লিচু
১৬. বড়ই (বরই বিচি যেন না থাকে)
১৭. কাঁচা মরিচ
১৮. শিমের বিচি
১৯. জলপাই
২০. পেঁপে
২১. আনারস ইত্যাদি

যা যা দেওয়া যাবে না

১. যে কোন ফলের বিচি
২. মাশরুম
৩. চকলেট
৪. পিয়াজ
৫. দুধ অথবা দুগ্ধজাতীয় খাবার পাখিকে দেওয়া থেকে বিরত থাকুন।

রোগমুক্ত রাখতে প্রতি সপ্তাহে পাখিকে নিম পাতা সজনে পাতা খেতে দিন।
ঠান্ডা ও বৃষ্টিতে পাখিকে Acv (অ্যাপেল সিডার ভিনেগার) খাওয়ানো উচিত। সাথে অবশ্যই ভালো মানের সিড মিক্স দিতে হবে।
সুস্থ্য থাকুক ভাল থাকুক আপনা শখের পাখিগুলো।

ভারতের একটা শহরের পঞ্চম শ্রেণী প্রাথমিক স্কুলের  এক শিক্ষিকা,যাঁর অভ্যাস ছিল, ক্লাস শুরু হওয়ার আগে রোজ তিনি "আই লাভ ইউ অ...
19/11/2023

ভারতের একটা শহরের পঞ্চম শ্রেণী প্রাথমিক স্কুলের এক শিক্ষিকা,যাঁর অভ্যাস ছিল, ক্লাস শুরু হওয়ার আগে রোজ তিনি "আই লাভ ইউ অল" বলতেন। কিন্তু তিনি জানতেন, তিনি সত্য বলছেন না। তিনি জানতেন ক্লাসের সবাই কে এক রকম ভাবে তিনি ভালবাসেন না।

রাজু নামে একটা বাচ্চা ক্লাসে যাকে তিনি মোটেও সহ্য করতে পারতেন না। রাজু ময়লা জামা-কাপড় পড়ে স্কুলে আসতো। তার চুলগুলো থাকত উষ্কো-খুষ্কো, খোলা থাকে জুতার বকলেস,শার্টের কলারে ময়লা দাগ, ক্লাসে পড়া বোঝানোর সময়ও সে থাকে খুব অন্য মনস্ক। মিস এর বকুনি খেয়ে, চমকে তাঁর দিকে তাকিয়ে থাকতো সে। কিন্তু তার শূন্য দৃষ্টি দেখে স্পষ্ট বোঝা যেত যে, রাজু শারীরিক ভাবে ক্লাসে উপস্থিত থাকলেও তার মন অন্য কোনখানে উধাও হয়ে গেছে, রাজুর প্রতি ধীরে ধীরে মিসের মনে ঘৃণার উদ্রেক হলো।

রাজু ক্লাসে ঢুকতেই, মিসের সমালোচনার শিকার হতো। সব রকম খারাপ কাজের উদাহরন রাজুর নামে হতে থাকল। বাচ্চারা তাকে দেখে আর খিলখিল করে হাসে, মিসও তাকে অপমান করে আনন্দ পান। রাজু যদিও এইসব কথার কোনও উত্তর দিতো না। মিস এর তাকে নিষ্প্রাণ পাথর বলে মনে হতো, যার মধ্যে অনুভূতি নামে কোন জিনিস ছিলো না। সমস্ত ধমক, ব্যঙ্গ-বিদ্রুপ আর শাস্তির জবাবে সে শুধু নিজের ভাবনায় শূন্য দৃষ্টিতে তাঁকে দেখতো, আর মাথা নীচু করে নিতো। এই ভাবে সে মিস এর অত্যন্ত বিরাগ ভাজন হয়ে উঠলো।

প্রথম সেমিস্টার শেষ হয়ে রিপোর্ট বেরোনোর সময় হলে মিস রেজাল্ট কার্ডে তার সম্পর্কে সব খারাপ কথা লিখে দিলেন l মা -বাবাকে দেখানোর আগে রিপোর্ট কার্ড হেড মিস্ট্রেসের কাছে পাঠাতে হতো। তিনি রাজুর রিপোর্ট দেখে মিসকে ডেকে পাঠালেন এবং বললেন, "মিস ! রিপোর্ট কার্ডে কিছু তো অনুপ্রেরণার কথা লেখা উচিত্ ! আপনি তো যা কিছু লিখেছেন তার থেকে রাজুর বাবা একদম নিরাশ হয়ে যাবেন।" মিস বললেন, "আমি মাফ চাইছি, কিন্তু রাজু এক খারাপ আর নিষ্কর্মা বাচ্চা, আমার মনে হয়না আমি ওর সম্পর্কে ভাল কিছু লিখতে পারবো !" মিস ঘৃণার সাথে এই কথা বলে সেখান থেকে উঠে এলেন।

হেড মিস্ট্রেস অদ্ভুত একটা ব্যাপার করলেন, তিনি চাপ রাশির হাত দিয়ে মিসের ডেস্কের ওপরে রাজুর আগের বছরের রিপোর্ট কার্ড রেখে দিলেন। পরের দিন যখন মিস ক্লাসে ঢুকলেন তখন রিপোর্টের ওপরে নজর পড়তে, উল্টে দেখেন সেটা রাজুরই রিপোর্ট কার্ড ! ভাবলেন আগের বছরও নিশ্চয়ই সে এইরকম আচরণ করেছে ! ভাবার সাথে সাথেই তৃতীয় শ্রেণীর রিপোর্টটা খোলেন, রিপোর্টের মন্তব্য পড়ে ওনার আশ্চর্যের সীমা রইলো না, রাজুর উচ্ছ্বসিত প্রশংসায় রিপোর্ট কার্ডটি ভরা, তাতে লেখা আছে, "রাজুর মতো বুদ্ধিমান বাচ্চা আমি আজ পর্যন্ত দেখিনি। অতি সংবেদনশীল বাচ্চা এবং নিজের সহপাঠী আর শিক্ষকের প্রতি সম্মান এবং সহযোগিতা করে। অন্তিম সেমিস্টারেও রাজু প্রথম স্থান আধিকার করে নেয়। অস্থির ভাবে মিস চতুর্থ শ্রেণীর রিপোর্ট খোলেন, সেখানে লেখা আছে "রাজুর লেখা পড়ার ওপর তার মায়ের অসুখের গভীর প্রভাব পড়ছে, পড়াশোনার প্রতি অমনোযোগী হয়ে উঠছে। রাজুর মা মারা গেছে এবং সঙ্গে রাজুর জীবনের যাবতীয় আশা ভরসা আর সুন্দর ভবিষ্যতের আলোও, তাকে বাঁচাতে হবে। আরও দেরী হয়ে যাওয়ার আগে, মিস এর মাথায় যেন অত্যন্ত ভারী বোঝা চেপে আছে, কাঁপা হাতে তিনি রিপোর্ট কার্ড বন্ধ করেন। তার নয়ন অশ্রুসজল হয়ে উঠলো, টপ টপ করে চোখের জল ঝরতে লাগলো।

পরের দিন যখন ক্লাসে ঢুকলেন তাঁর নিজের চির অভ্যস্ত বাক্যের পুনরাবৃত্তি করলেন, "আই লাভ ইউ অল। কিন্তু বুঝতে পারছিলেন আজও তিনি সত্যের অপলাপ করছেন। কারণ এলোমেলো চুলে এই ক্লাসে বসে থাকা বাচ্চাটা, রাজুর প্রতি যে স্নেহ তিনি হৃদয়ে অনুভব করছিলেন, তা' ক্লাসের অন্য বাচ্চাদের জন্য হওয়া সম্ভবই ছিল না। পড়া বোঝানোর সময় রোজের দিনচর্চার মতো রাজুর দিকে একটা প্রশ্ন ছুঁড়ে দিলেন, আর রাজুও রোজের মতো মাথা নীচু করে নিলো। যখন বেশ কিছুক্ষণ পর্যন্ত মিস এর ধমক বা শ্লেষাত্মক কথার কোনটাই বা সহপাঠীদের সম্মিলিত হাসির শব্দ কানে এলো না তখন সে আচমকা মাথা উঁচু করে তাঁর দিকে চেয়ে রইলো। অপ্রত্যাশিতভাবে তার মাথা আজ মুন্ডিত, কেশহীন ছিলো। তাঁর মুখে মৃদু হাসি। তিনি রাজুকে কাছে ডাকলেন এবং প্রশ্নের উত্তর বলে দিয়ে তা' আওড়াতে বললেন। রাজু তিন-চারবার চেষ্টার পর অবশেষে বলতে পারলো। তার জবাব দেওয়ার সাথে সাথে মিস খুশি হয়ে শুধু নিজে তালি দিলেন না, বরং অন্য সব বাচ্চাদের দিয়েও তালি দেওয়ালেন। তারপরে এটা প্রত্যেক দিনের দিনচর্চা হয়ে গেলো। মিস সব উত্তর নিজের থেকে দিতেন, তারপর সস্নেহে রাজুকে বাহবা দিতেন। সব ভালো কাজের উদাহরণে রাজুর নাম বলা হতে লাগলো। ধীরে ধীরে বিষণ্ণতার কবর ফুঁড়ে রাজু বেরিয়ে আসলো। এখন থেকে আর মিস কে প্রশ্নের সাথে উত্তর বলে দেওয়ার প্রয়োজন হতো না। সে রোজ সঠিক উত্তর দিয়ে সবাই কে প্রভাবিত করতো এবং নতুন নতুন প্রশ্ন করেও হয়রানও করতো।তার চুলগুলো এখন অনেকটা পরিপাটি থাকে, জামাকাপড়ও যথেষ্ট পরিষ্কার থাকে, হয়তো সে নিজেই কাচঁতে শুরু করে ছিল। দেখতে দেখতে বছর শেষ হয়ে গেল, রাজু দ্বিতীয় স্থান অধিকার করে পরবর্তী ক্লাসে উত্তীর্ণ হলো।

বিদায় কালীন সমারোহে সব বাচ্চারা মিস এর জন্য সুন্দর সুন্দর উপহার নিয়ে এলো, আর মিস এর টেবিলের ওপর একের পর এক পাহাড় জমে গেলো। এত সুন্দর ভাবে প্যাক করা উপহারের মধ্যে পুরানো কাগজে অগোছালো ভাবে মোড়া একটা উপহার পড়ে ছিলো। বাচ্চারা তাই দেখে হাসতে লাগলো। কারও জানতে বাকি রইলো না যে, উপহার হিসেবে সেটা রাজুই এনেছে। মিস উপহারের এই ছোট পাহাড় থেকে সেটা বার করে আনলেন, খুলে দেখলেন তার ভিতরে মহিলাদের আতরের অর্ধেক ব্যবহার করা একটা শিশি আর এক হাতে পরার মতো বড় একটা বালা যার বেশির ভাগ মোতি ঝরে গিয়ে ছিলো। মিস চুপচাপ শিশি থেকে নিজের গায়ে আতর ছিটিয়ে দিলেন এবং বালাটা হাতে পরে নিলেন। বাচ্চারা এই দৃশ্য দেখে খুব অবাক হয়ে যায়। রাজু নিজেও, শেষ পর্যন্ত রাজু থাকতে না পেরে মিসের কাছে এসে দাঁড়িয়ে পড়লো। কিছুক্ষণ পর সে থমকে থমকে মিসকে বলল, "আজ আপনার গা' থেকে আমার মায়ের মতো গন্ধ আসছে।

সময় পাখা মেলে উড়তে লাগলো। দিন সপ্তাহে, সপ্তাহ মাসে আর মাস বছরে বদলাতে আর কোথায় সময় লাগে ? কিন্তু প্রত্যেক বছরের শেষে রাজুর কাছ থেকে একটা চিঠি নিয়মিত ভাবে আসতো, যাতে লেখা থাকে, "এই বছর অনেক নতুন টিচারের সংস্পর্শে এসেছি কিন্তু আপনার মতো কেউ ছিলো না। তারপর রাজুর স্কুল পর্ব শেষ হয়ে গেলো এবং চিঠির ধরাবাহিকতা হলো শেষ।

কয়েক বছর পর মিস এরও অবসর হয়ে গেল। একদিন তাঁর নিজের মেলে রাজুর চিঠি পেলেন যাতে লেখা ছিলো, "এই মাসের শেষে আমার বিয়ে, আপনাকে ছাড়া বিয়ের কথা ভাবতে পারি না, আরেকটা কথা, জীবনে আমি অনেক লোকের সাথে মিশেছি, আপনার মতো কেউ নেই, ডক্টর রাজু, সাথে প্লেনে যাওয়া আসার টিকিটও খামের মধ্যে দিয়েছিলো।

মিস নিজেকে কিছুতেই আটকে রাখতে পারছিলেন না। তিনি স্বামীর থেকে অনুমতি নিয়ে অন্য শহরে যাওয়ার জন্য রওনা দিলেন। বিয়ের দিনে যখন বিয়ের আসরে উপস্থিত হলেন, তখন খানিকটা দেরী হয়ে গিয়েছিলো। তাঁর মনে হয়েছিল বিয়ের অনুষ্ঠান নিশ্চয়ই শেষ হয়ে গেছে, কিন্তু এটা দেখে তাঁর আশ্চর্য হওয়ার সীমা ছিলো না, শহরের বড় বড় ডাক্তার, বিজনেসম্যান, এমন কি বিয়ে দেবেন যিনি সেই পণ্ডিতজীও ক্লান্ত হয়ে পড়ে ছিলেন, যে এখনও কার আসা বাকি আছে, কিন্তু রাজু বিয়ের অনুষ্ঠানের মণ্ডপের বদলে গেটের দিকে চোখ লাগিয়ে তাঁর আসার অপেক্ষা করছিলো। তারপর সবাই দেখে ছোটবেলার সেই টিচার গেটের ভিতরে ঢুকতেই রাজু তাঁর ওপর ঝাঁপিয়ে পড়ে হাত ধরেছে, যে হাতে তিনি এখনও সেই খারাপ হয়ে যাওয়া বালাটা পরে ছিলেন, তাঁকে সসম্মানে মঞ্চে নিয়ে যাওয়া হলো। মাইক হাতে নিয়ে সে এইরকম কিছু বললো, "বন্ধুরা ! আপনারা সবাই সব সময় আমাকে আমার মায়ের সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করতেন? আর আমি আপনাদের সবার কাছে প্রতিজ্ঞা করতাম যে, খুব শিগগির সবাই কে তাঁর সাথে পরিচয় করিয়ে দেবো, ইনি আমার মা "

সংগৃহীত

বেকাররা একবার হলেও পড়বেন : গত ৫ বছর আগের ঘটনা তখন আমি প্রতিদিন সকালে শার্ট-প্যান্ট পরে একটা ব্যাগ নিয়ে বেরিয়ে যেতাম চাকর...
16/11/2023

বেকাররা একবার হলেও পড়বেন :
গত ৫ বছর আগের ঘটনা তখন আমি প্রতিদিন সকালে শার্ট-প্যান্ট পরে একটা ব্যাগ নিয়ে বেরিয়ে যেতাম চাকরির উদ্দেশ্যে। আর সন্ধ্যেয় বাড়ি ফিরে ধ'পা'স করে চেয়ারের ওপরে বসে পড়ে বলতাম "আজকেও হল না।
এই ইন্টারভিউতেও কোনো সুবিধে করতে পারলাম না।"
আমার পরিবার বলতে শুধু মা-বাবা, আর স্কুলজীবনের প্রেমিকা পিয়ালী। প্রথম প্রথম যখন আমি চাকরি না পেয়ে ঘরে ফিরতাম, তখন মা আমার মাথায় হাত বুলিয়ে দিত। বলতো, "চেষ্টা কর, পরেরবার নিশ্চয়ই হবে।"
ধীরেধীরে মায়ের ব্যবহারও বদলাতে লাগল। তখন আমি বাড়ি ফিরলে মা আর সান্ত্বনা দিত না, বরং খো'টা দিতো। মা ও বুঝে গেছিল এই ছেলের দ্বারা আর কিচ্ছু হবার নয়। কিন্তু পিয়ালী সাথে ছিল। সে বরাবর বলত, "তুই চাকরি না পেলেও আমাদের বিয়ে হবেই"।
ছেলেদেরকেই স্ত্রীর দায়িত্ব নিতে হবে তার কোনো মানে নেই, কলেজটা শেষ হলেই আমি চাকরিতে ঢুকব, তারপর সংসার সামলানোর দায়িত্ব আমার।"
এভাবে দু'মাস কে'টে গেল। সন্ধ্যেয় বাড়ি ফিরে বিছানায় গা এলিয়ে দিয়েই দেখলাম মোবাইলে পিয়ালীর ফোন ঢুকছে। ফোন ধরামাত্র পিয়ালী জিজ্ঞেস করল, "আজকেও কিছু হলনা তো?"
উত্তর দিলাম, "না।" পিয়ালী বলল, "শোন, আমার বাড়ি থেকে কিছুতেই মেনে নিচ্ছেনা তোর সাথে সম্পর্ক। একজন বেকার ছেলের সাথে থাকা যায়না। আমি মিউচুয়াল ব্রেক"আপ চাই।" আমি একদম চু'প করে গেলাম। তারপর ধীরেধীরে বললাম...
"কিন্তু তুই যে কথা দিয়েছিলিস।" পিয়ালী বলল, "তুইও কথা দিয়েছিলিস চাকরি পেয়ে দেখাবি। কিন্তু বুঝে গেছি তোর দ্বারা কিছু হবার নয়। আমি আমাদের কলেজের সুমনের সাথে সম্পর্কে চলে গেছি। পারলে আমায় ভু'লে যা।"
ওপার থেকে লাইন কে'টে গেল। আমি বরাবরেই খুব শান্ত স্বভাবের ছেলে, খুব ক'ষ্ট হলেও কখনও সেটা প্রকাশ করি না। আমার তখনও বিশ্বাস হচ্ছিলনা, পিয়ালী অন্য কারুর সাথে সম্পর্কে যেতে পারে। সেই মেয়েটা, যে আমাকে এত ভালোবাসত, যে সারাজীবন সাথে থাকার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল। যে বলেছিলো আমাকে ছাড়া নাকি বাঁচবে না।
আমার ছোটবেলার প্রেম।
আমার হঠাৎ করে
ছেলেবেলার কথা মনে পড়ল। তখন খুব ক'ষ্ট হলে মায়ের কোলে মাথা রেখে কাঁ'দ'তা'ম। আমি বিছানা থেকে উঠে গিয়ে একবার মায়ের সামনে দাঁড়ালাম, আমার খুব ইচ্ছে হচ্ছিল একবার মাকে জড়িয়ে ধরতে। মা দেখতে পেল আমাকে। তারপর ঝাঁ'ঝা'লো গলায় বলল, "শোন কাল থেকে আর ইন্টারভিউতে যেতে হবে না। তোর বাবা বলেছে একটা চায়ের দোকান খুলে দেবে, নাহলে বাজারে সবজি বিক্রি করবি। অন্তত সংসারে একটু টাকা তো ঢুকবে। আমাদের থেকে টাকা নিয়ে রোজ বাস ভাড়া দিয়ে ইন্টারভিউ দেবার কোনো দরকার নেই।"
আমার একটু আগেই ইচ্ছে হচ্ছিল মাকে জড়িয়ে ধরে একটু য'ন্ত্র'ণা'টা লাঘব করতে। কিন্তু মায়ের কথাগুলো তী'রের মত আমার বুকে গিয়ে বিঁ'ধ'ল। একবারও বলতে পারলাম না, ''মা আমার খুব ক'ষ্ট হচ্ছে। আমি তোমার ছেলে।'' চুপ করে দাঁড়িয়ে রইলাম।
হঠাৎ দেখলাম ফোনে আবার পিয়ালীর ফোন ঢুকছে। আমি ফোন ধরতেই ওপার থেকে পিয়ালীর গলা ভেসে এলো, "শোন, আমি তোকে যে গিফটগুলো দিয়েছিলাম, সেগুলো আমায় ফেরত দিয়ে দিস। আমার বয়ফ্রেন্ড চায়না আমার এক্সের কাছে আমার কোনো স্মৃতি থাকুক। কাল সন্ধ্যে সাতটায় আমাদের বাড়ির নীচে জিনিসগুলো নিয়ে চলে আসিস।" ফোন আবার কে'টে গেল।
পরের দিন কাঁ'টায় কাঁ'টায় সাতটার সময় দেখা হল দুজনের। আমি ব্যাগ থেকে এক এক করে তিলেতিলে জমানো প্রতিটা উপহার ফিরিয়ে দিলাম পিয়ালীকে। হঠাৎ আমার শার্টের ফাঁকে চোখ পড়তেই পিয়ালী জিজ্ঞেস করল, "তোর গলায় ওটা কিসের আইডি কার্ড ঝোলানো রে?" আমি স্বভাবত শান্তস্বরে জবাব দিলাম, "আমার অফিসের"।
পিয়ালী অবাক হয়ে বলল, "অফিসের মানে? চাকরি কবে পেলি?" বললাম, "দু'মাস আগেই। প্রথম ইন্টারভিউটা থেকেই চাকরি পেয়েছিলাম। এতদিন আমি ইন্টারভিউয়ের নাম করে আসলে অফিসেই যেতাম।" বেশ খানিক্ষণ দুজনেই চু'প। তারপর ছলছলে চোখে পিয়ালী জিজ্ঞেস করল, "এতবড় মিথ্যেটা কেন বললি? এতদিন ধরে এভাবে ধোঁ'কা দিয়ে গেলি?" আমি ফ্যাকাসে হেসে বললাম, "নাহলে আসল রূপটা কিভাবে দেখতে পেতাম?
মাঝেমাঝে সফলতার পাশাপাশি ব্য'র্থ'তার গল্প শোনানোটাও জরুরী। একমাত্র ব্য'র্থ'তাই পারে শুভাকাঙ্ক্ষীদের প্রকৃত স্বরূপ চিনিয়ে দিতে।"
পিয়ালী চোখ ব'ন্ধ করে ফেলল, হয়ত সে কা'ন্না লুকোবার চেষ্টা করছিল। আমি বাড়ি ফিরে যেতে উদ্যত হলেই পিয়ালী আমার হাত চে'পে ধরে বলল, "আমায় ছেড়ে যাস না। ভু'ল বুঝেছিলাম তোকে। আমাদের এতদিনের ভালোবাসার সম্পর্ক।" আমি আলতো করে ওর হাতটা ছাড়িয়ে নিয়ে বললাম, "ভালোবাসার নয়, ব্যবসার সম্পর্ক।
যেখানে লাভ আর লোক'সানের হিসেব ক'ষা হয়, সেটা বিজনেস। ভালোবাসা স্বার্থহীন হয়।"
আমি বাড়ির দিকে চলতে শুরু করলাম আর দুই হাতে মুখ চে'পে ধরে দাঁড়িয়ে রইল পিয়ালী।
বাড়ির বেল বাজাতেই মা দরজা খুলল। মুখে একটা তি'র্য'ক হাসি নিয়ে বলল, "আজকেও মুখ কা'লো করে ফিরেছিস তো? এত দেরী হল ফিরতে? চু'রি'চা'মা'রি করছিলিস নাকি?" আমি শান্তভাবে ঘরে ঢুকে জুতো খুললাম, হাত মুখ ধুলাম। তারপর ব্যাগ থেকে একটা মোটা খাম বের করে টেবিলে রেখে বললাম...
"দু'মাসের মাইনেটা ব্যাঙ্ক থেকে ক্যাশে তুলে আনলাম। অনেক বড় সংখ্যা, সময় নিয়ে গুনো। আর পাশে আমার আইডিটা রইল, সব উত্তর ওই চৌকো কার্ডের মধ্যে পেয়ে যাবে।" মা অবাক হয়ে চেয়ে রইল, আর আমি নিজের ঘরে ঢুকে দরজাটা টে'নে দিলাম....

নাদিয়া আমার ছাত্রী। আজকে পড়ানোর সময় দেখি তার বইয়ের ভাঁজে রঙিন একটা চিরকুটে লেখা " বড্ড বেশি ভালোবাসি স্যার "। আমি তো রীত...
09/10/2022

নাদিয়া আমার ছাত্রী। আজকে পড়ানোর সময় দেখি তার বইয়ের ভাঁজে রঙিন একটা চিরকুটে লেখা " বড্ড বেশি ভালোবাসি স্যার "। আমি তো রীতিমতো অবাক হবার চরম পর্যায়ে, তবে এমন কিছু একটা আগেই ভেবেছিলাম। কিছুদিন ধরে নাদিয়ার আচরণ একটু অস্বাভাবিক মনে হতো।

চিরকুটটা নিজের কাছে রেখে স্বাভাবিক ভাবেই পড়ানো শেষ করলাম। তারপর নির্দিষ্ট সময় শেষে যখন ওর রুম থেকে বের হচ্ছিলাম তখন নাদিয়া বললো,

-- স্যার কিছু বললেন না?

-- কোন বিষয়?

-- আপনাকে যে চিরকুট দিলাম।

-- সেখানে তো কোনো উত্তর দেবার মতো কিছু পেলাম না। তুমি তোমার নিজের কিছু কথা লিখে দিয়েছ, সবসময় সব জিনিসের উত্তর হয় না।

-- কিন্তু আমার তো উত্তর চাই।

- অপেক্ষা করো, পেয়ে যাবে।

আমি আর কথা না বাড়িয়ে বাসা থেকে বেড়িয়ে পড়লাম, এটাই হয়তো আমার শেষ যাওয়া। আর এ বাড়িতে পা রাখা যাবে না, সদ্য বেড়ে ওঠা নাদিয়ার আচরণ প্রশ্রয় দেওয়া যায় না।

নাদিয়াদের বাসা থেকে বেরিয়ে আমি সরাসরি আঙ্কেলের অফিসে চলে এলাম। আঙ্কেল আমাকে দেখে খানিকটা অবাক হয়েছে নিশ্চয়ই কেননা এখনো মাস শেষ হয়নি।
মাস শেষে টিউশনির বেতনটা আঙ্কেলের অফিসে এসে আমাকে নিতে হয়। প্রতি মাসের এক তারিখ টিউশনি শেষ করে অফিসে যাবার নিয়ম সেই শুরু থেকে।

-- কি ব্যাপার রাফসান? কেমন আছো?

-- আলহামদুলিল্লাহ আঙ্কেল, আপনি কেমন আছেন?

-- এইতো চলছে।

-- আমি একটা কথা বলতে এসেছি আঙ্কেল।

-- বলো।

-- আমি নাদিয়াকে আর পড়াতে পারবো না। তাই ওর জন্য নতুন শিক্ষক রাখার ব্যবস্থা করেন।

-- চাকরি হয়ে গেছে?

-- না আঙ্কেল, অন্য কারণ।

-- আমাকে বলা যাবে?

-- আঙ্কেল, নাদিয়া আমাকে প্রপোজ করেছে। সে হয়তো আমাকে পছন্দ করে ফেলেছে তাই আমি চাইনা এটা আর সামনে বাড়ুক।

-- হুম বুঝলাম।

- আমাকে ভুল বুঝবেন না, আমি চাই নাদিয়া অনেক বড় হোক। নাদিয়া বেশ মেধাবী, তার মতো ছাত্রী আমি কখনো পাইনি। তাই তার সেই মেধাকে আমি প্রেমের ফাঁদে ফেলতে চাই না।

-- তুমি তার থেকে আলাদা হলে সে কি স্বাভাবিক থাকবে বলে মনে হয়?

-- নাদিয়া সবেমাত্র ইন্টারমিডিয়েটে পড়ে, এটা তার ভুল করার সময়। আপনি আজকে বাসায় গিয়ে তাকে যথেষ্ট বোঝাবেন। তাকে আমার কথা বলবেন।

-- কি বলবো?

-- বলবেন যে আমি বলেছি, তাকে ভালো করে পড়াশোনা করতে হবে। ইন্টারমিডিয়েট পাশ করে দেশের ভালো কোনো ভার্সিটিতে তাকে ভর্তি হতে হবে। যদি সে পারে তাহলে একদিন আমি তার সামনে আসবো। তার সফলতা একদিন আমাকে তার কাছে নিয়ে আসবে।

-- সত্যি সত্যি যদি সে অপেক্ষা করে?

-- করবে না, সময়ের সঙ্গে সঙ্গে সমাজ, মানুষ, প্রকৃতি, সবকিছু বদলে যায়। ২/১ বছর গেলে সে এমনিতেই আমাকে ভুলে যাবে।

-- ঠিক আছে আমি তাই বলবো।

-- আজকে থেকে আপনি একটু বেশি সময় দিবেন তাকে। তবে আমাকে প্রপোজ করার জন্য তাকে মোটেই বকাবকি করার দরকার নেই। তাকে ভালোবাসা দিয়ে বোঝাবেন, সে বুঝতে পারবে।

-- চা খাবে?

-- না আঙ্কেল।

-- একটা প্রশ্ন করি?

-- জ্বি আঙ্কেল, করেন।

-- নাদিয়া আমার একমাত্র সন্তান, যথেষ্ট মেধাবী শিক্ষার্থী সেটা তুমি নিজেই স্বীকার করেছো।

-- হ্যাঁ সত্যি বলছি।

-- সৌন্দর্যের দিক থেকেও নাদিয়া কিন্তু কোনো অংশে কম নয়, তাই না রাফসান?

-- জ্বি এটাও সত্যি, নাদিয়া অনেক সুন্দরী।

-- একটা মেয়ের এতগুলো ভালো দিক থাকার পরও সে নিজে থেকে তোমাকে প্রপোজ করেছে। কিন্তু তুমি তাকে গ্রহণ না করে, রিজেক্ট করে কেন এড়িয়ে যেতে চাইছো? নাদিয়াকে তোমার পছন্দ নয় তাই না?

-- আঙ্কেল আমি একটা মেয়েকে ভালোবাসি। অনেক বেশি সেই ভালোবাসা, তাই আমার কাছে পৃথিবীতে সে ছাড়া আর কাউকে ভালোবাসা সম্ভব নয়।

-- সে মেয়ে কি করে? পড়াশোনা?

-- আমার চেয়ে এক বছরের জুনিয়র ছিল, গত তিনমাস আগে তার বিয়ে হয়ে গেছে।

-- মানে?

-- জ্বি, পরিবার থেকে ভালো পাত্র পেয়ে তাকে বিয়ে দিয়েছে। চাইলে পালিয়ে বিয়ে করতে পারতাম কিন্তু সে আমি দুজনের কেউ সেটা চাইনি এটা।

-- মাঝে মাঝে অফিসে এসো, দেখা করে যেও।

-- কথা দিতে পারছি না, তবে আপনার দাওয়াত আমার স্মরণ থাকবে।

এটাই আঙ্কেলের সঙ্গে আমার শেষ দেখা।

রাত দশটার মতো বেজে গেল তবুও মেসে ফিরে যেতে ইচ্ছে করছে না। দুই মাসের বাসা ভাড়া বাকি হয়ে গেছে, গত মাসে যেদিন আঙ্কেলের অফিস থেকে টাকা নিয়ে বের হলাম। তার ঠিক ৩/৪ ঘন্টার মধ্যে পকেট ফাঁকা করে রাজধানীর কোনো এক পকেটমার তার পকেট ভারি করেছে।

আজকে দুপুরে মেস থেকে বের হবার সময় মেসের ম্যানেজার কড়া করে কথা বলে দিয়েছে। দরকার হলে মোবাইল বিক্রি করে দিয়ে তারপর যেন বাসা ভাড়া দেই এমন কথা বলেছে।

অনিচ্ছা সত্ত্বেও ক্লান্ত হয়ে সাড়ে দশটার দিকে মেসে ফিরে গেলাম। আমার একমাত্র রুমমেট সাদ্দাম, অনার্স দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র। ঘরে ঢুকে বিছানায় শুয়ে পড়লাম, পোশাক পাল্টাতে ইচ্ছে করছে না।
একটু পরে সাদ্দাম বললো,

-- সন্ধ্যা থেকে কোই ছিলেন রাফসান ভাই? আর মোবাইল বন্ধ কেন? আফরিন আপু এসেছিল।

আমি চমকে উঠলাম। বিয়ের পরে আফরিনের সঙ্গে আর যোগাযোগ হয়নি আমার। আজকে হঠাৎ করে মেসে চলে এসেছে, ঘটনা কি?

-- কখন এসেছিল?

-- বিকেলে এসেছিল, ঘন্টা দুই অপেক্ষা করে চলে গেছে।

-- ওহ্।

-- আপনার দু মাসের বাসা ভাড়া দিয়ে গেছে আর একটা চিঠি রেখে গেছে। চিঠিটা আপনার টেবিলে "আরণ্যক" উপন্যাসের মধ্যে আছে।

-- আচ্ছা ঠিক আছে।

ক্লান্ত শরীরে সেভাবেই ঘুমিয়ে গেছিলাম। রাত তিনটার দিকে হঠাৎ ঘুম ভেঙ্গে গেল, সাদ্দাম বই পড়ছে এখনো। এই ছেলেটা অনেক মেধাবী, ঠিক নাদিয়ার মতো বলা যায়। নাদিয়া যেকোনো পড়া সহজেই আয়ত্ত করতে পারে। আর সবসময়ই সে নতুন করে প্রশ্নের উত্তর সাজিয়ে বের করে। এতে করে শিক্ষকদের দৃষ্টি আকর্ষণ বেশি হবে বলেই আমার ধারণা।

মাথা নাড়া দিলাম, মাথার মধ্যে নাদিয়া ঘুরঘুর করতে শুরু করেছে। তার চিন্তা মাথা থেকে বের করে দিতে হবে, আর সেজন্য এখন আফরিনের রেখে যাওয়া চিঠিটা পড়া যেতে পারে।

আমি বিভূতিভূষণের "আরণ্যক" উপন্যাসের মধ্য থেকে চিঠিটা বের করলাম। আফরিন জানে এটা আমার প্রিয় একটা উপন্যাস।

কেমন আছো?
তোমার কথা মতো মা-বাবার পছন্দের ছেলেকেই বিয়ে করলাম। সত্যি বলছি, হাসবেন্ড হিসেবে সে অনেক ভালো। আমি তোমার সঙ্গে কাউকে তুলনা করতে চাই না তাই করলাম না। নাহলে সবদিক দিয়ে সে প্রায় তোমার মতো।
সপ্তাহ খানিকের মধ্যে আমরা দেশ ছাড়ছি। চলে যাবো ইউরোপের কোনো এক উন্নত ব্যস্ত শহরে। তোমার সঙ্গে দেখা করার অনেক ইচ্ছে ছিল, কিন্তু তোমার মোবাইল বন্ধ। বাসা ভাড়া দিয়ে গেলাম, তবে আমার মন বলছে আগামী মাসের মধ্যে তুমি ভালো একটা চাকরি পাবে। তুমি তো জানো আমি মাঝে মাঝে যা বলি তাই হয়ে যায়, এবার যদি হয় তাহলে আমি হ্যাপি।

ভালো থাকার চেষ্টা করবে, কত বছর পরে আর দেশে ফিরবো জানি না। তবে বাংলাদেশে ফিরে আমি তোমার সাথে দেখা করার চেষ্টা করবো। আশা করি সব ধরনের যোগাযোগ বন্ধ করবে না।

আফরিন...

তিনবার পড়লাম। তারপর ভাজ করে সেভাবেই রেখে দিয়ে রুম থেকে বেরিয়ে হলাম। রাতে কিছু খাওয়া হয়নি তাই ক্ষুধাটা বড্ড জ্বালাতন শুরু করেছে।

★★

ছয় বছর পেরিয়ে গেছে। অফিসে বসে বসে সেই চিঠিটা একটু আগে আবার পড়লাম। আফরিন কিংবা নাদিয়ার পরিবারের সঙ্গে আর যোগাযোগ হয়নি। অবশ্য ঢাকা শহর ছেড়ে আমি সেই সময়ই চট্টগ্রামে চলে এসেছিলাম। এরপর আর কোনদিন ঢাকা শহরে যাইনি তাই কারো সঙ্গে যোগাযোগ হবার সুযোগ ছিল না।
ব্যবহৃত সিম আর ফেসবুক আইডি সবকিছু শেষ করে দিয়ে নতুন জগৎ তৈরি করলাম। এখনো ব্যাচেলর বাসা ভাড়া নিয়ে বাস করি, সকাল বেলা অফিসে নাস্তা করি। দুপুরে অফিস থেকেই লাঞ্চ করা হয়, আর রাতে হালকা কিছু খাওয়া।
এইতো জীবন।

সপ্তাহ খানিক পরের ঘটনা। অফিস স্টাফদের নিয়ে কক্সবাজার থেকে ঘুরে এলাম গতকাল। চট্টগ্রাম থেকে খুব কাছেই, বৃহস্পতিবার রাতে গিয়ে আবার শুক্রবার রাতে ফিরে এসেছি। তার পরে গতকাল শনিবার পেরিয়ে আজ রোববার।

রিসিপশন থেকে কল দিয়ে বললো আমার সঙ্গে একটা মেয়ে দেখা করতে এসেছে। নাম জিজ্ঞেস করতেই সে বললো মেয়েটার নাম নাদিয়া।

আমি চমকে গেলাম, সরাসরি নিজেই ওয়েটিং রুমের মধ্যে গিয়ে দেখি সোফায় কালো শাড়ি পরে বসে আছে এক তরুণী। মেয়েটা সেই নাদিয়া এটা চিনতে একটুও ভুল হলো না, আমাকে দেখে সে নিজেও তাকিয়ে আছে।

আমি নাদিয়াকে নিয়ে অফিস থেকে বের হলাম। আগ্রাবাদের কাছেই একটা পার্ক আছে সেখানে চলে গেলাম দুজনেই। এরমধ্যে আমাদের কোনো কথা হলো না। পার্কে গিয়ে আমিই প্রথম জিজ্ঞেস করলাম,

-- বাদাম খাবে?

-- হুম।

-- কেমন আছো তুমি?

-- ভালো, আপনি কেমন আছেন স্যার?

-- আমিও ভালো আছি, এতদিন পরে কীভাবে খুঁজে পেলে আমাকে? সরাসরি অফিসে।

-- আপনি কি বিরক্ত হয়েছেন?

-- না তবে অবাক হয়েছি। আমি ধরেই নিয়েছি আমাদের আর কোনদিন দেখা হবে না। আঙ্কেল আন্টি কেমন আছে?

-- তারাও ভালো আছে।

-- কীভাবে জানলে আমি এই অফিসে চাকরি করি?

-- আপনারা দুদিন আগে কক্সবাজার গিয়েছেন তাই না?

-- হ্যাঁ।

-- আপনারা যে গ্রুপের সঙ্গে গেছেন সেই গ্রুপের সঙ্গে আমি বেশ কয়েকবার ভ্রমণ করেছি। সাজেক বান্দরবান, রাঙামাটি, এমনকি কক্সবাজারও তাই ওই গ্রুপের সঙ্গে আমার এড আছে। কক্সবাজারে তোলা আপনাদের সবার কিছু গ্রুপ পিকচার সেই গ্রুপের মধ্যে আপলোড করা হয়েছে। আমি প্রথমে সেখানেই দেখেছি আপনাকে, এ ক'বছরে খুব বেশি পরিবর্তন হয়নি আপনার।

-- হুম বুঝলাম।

-- ওদের সঙ্গে অনেকবার ভ্রমণ করার কারণে তাদের সঙ্গে হালকা কথাবার্তার পরিচয় ছিল। তাই সেখানে জিজ্ঞেস করলাম, তারপর তারা বললো আপনারা একই অফিসের কিছু স্টাফ।

-- এতো কষ্ট করে খোঁজার কি দরকার ছিল?

নাদিয়া এবার আমার চোখের দিকে তাকিয়ে রইল বেশ কিছুক্ষণ। তারপর বললো,

-- দরকার নেই তাই না স্যার?

-- না মানে, এতদিনে তোমার বিয়ে সংসার সব হবার কথা। পরিবার থেকে নিশ্চয়ই ভালো কোনো ছেলে দেখে বিয়ে দিয়েছে।

-- যেখানে পরিবার নেই, সেখানে আমার বিয়ে?

-- মানে?

-- আপনি চলে আসার পরে তিনমাসের মধ্যে মা-বাবার ডিভোর্স হয়ে যায়। দোষটা সম্পুর্ণ বাবা করেছেন, সেই কারণে মা ও তাড়াহুড়ো করে আলাদা হবার সিদ্ধান্ত নেয়।

-- অবিশ্বাস্য।

-- ডিভোর্সের পরে আমি বাবার সঙ্গে ছিলাম, আর মা চলে গেল মামার বাসায়। এরপর বাবা হুট করে আবার বিয়ে করেন, আমি আর সেই বাসায় থাকার মতো স্বস্তি পাচ্ছিলাম না। মামার বাসায় যাবার কোনো ইচ্ছে ছিল না তাই একপ্রকার বাধ্য হয়ে মেসে উঠতে হলো।

-- তারপর?

-- চিন্তা করতে পারেন? মা-বাবা সবাই আছে কিন্তু আমি কাউকে পাইনি। বাবা মাসে মাসে টাকা দিতেন, তবে আমিও এরমধ্যে টিউশনি খুঁজতে শুরু করি।

-- তখন কি ইন্টারমিডিয়েট পরীক্ষা শেষ?

-- হ্যাঁ, ভার্সিটি এডমিশন নেবো এরকম মুহূর্ত।

-- চান্স পেলে কোথায়?

-- ইডেন মহিলা কলেজ।

-- আন্টি এখন কোথায়?

-- মা'ও বিয়ে করে নিয়েছে। কি করবে? বলেন।

-- এতকিছু হয়ে গেল?

-- সদ্য ভার্সিটিতে ওঠা একটা মেয়ের মা-বাবার ডিভোর্স হয়ে যায় তারপর তারা দুজনেই যদি আলাদা আলাদা বিয়ে করে। তাহলে সেই মেয়ের মানসিক অবস্থা কেমন হতে পারে স্যার?

-- আমি এমনটা আশা করিনি।

-- এরপর থেকে সবসময় ঘোরাফেরা করতাম। সুযোগ পেলেই যেকোনো গ্রুপের সঙ্গে ট্যুরে অংশ নিতাম৷ নতুন সংসারে গিয়ে মা নিজেও আমাকে টাকা দিতেন আর বাবা তো আগে থেকেই। তাই আর টিউশনি করতে হতো না। একসময় যে নাদিয়াকে আপনি পড়াতেন সেই নাদিয়া নিজেও বেশ কিছুদিন টিউশনি করিয়েছে।

-- পড়াশোনা তো এখনো শেষ হয়নি?

-- না।

-- আপনি চলে এসেছেন ছয় বছর হয়ে গেছে, বছর খানিক চলে গেছে এইচএসসি পাশ করে। আর বাকি পাঁচ বছর ভার্সিটিতে।

-- নতুন করে কাউকে ভালো লাগেনি?

-- একজনকেই ভালো করে ভালোবাসতে পারলাম না সেখানে আবার আরেকজন?

-- আমি একজনকে ভালোবাসতাম জানো?

-- আপনি চলে আসার পর আমি আপনার মেস খুঁজে বের করেছিলাম। বাবা বলেছিলেন লাভ হবে না কিন্তু মন মানতো না তাই খুঁজতাম। আপনার রুমে যে ছেলেটা ছিল তার কাছে জানতে পারি আফরিন নামের একটা মেয়েকে ভালোবাসতেন।

-- জানার পরে ভুলে যেতে ইচ্ছে করেনি?

-- না, যদি তার সঙ্গে বিয়ে হতো তাহলে নাহয় একটা কথা ছিল।

-- এখন তো খুঁজে পেলে, মন ভালো লাগছে?

এবার ভেজা চোখ নিয়ে নাদিয়া হাসলো। অনেক মিষ্টি সেই হাসিটা, হাসতে হাসতে বললো,

-- আপনি বলেছিলেন আমি জীবনে সফল হতে পারলে আপনি আমার সামনে যাবেন।

-- এখনো তো হওনি।

-- হলে বা কি হতো? আপনি তো আমার কোনো খবর রাখেননি।

-- আমি তোমার ভালো চেয়েছিলাম, কিন্তু তুমি এভাবে একা হয়ে যাবে ভাবিনি।

-- আমি কি আমার অপেক্ষার পুরষ্কার পাবো না?

-- কি চাও?

-- যাকে এতো কষ্ট করে খুঁজে বের করলাম।

-- ভেবে তারপর জানাবো।

ওর মুখটা কালো হয়ে গেল। আমি নাদিয়ার একটা হাত ধরে সামনে হাঁটতে লাগলাম। চারিদিকে তখন মাগরিবের আজান দিচ্ছে।

রাত এগারোটা।
নাদিয়াকে ঢাকার বাসে তুলে দেবার জন্য তাকে নিয়ে অলংকার বাসস্ট্যান্ডে অপেক্ষা করছি। নাদিয়া এখনো মন খারাপ করে দাঁড়িয়ে আছে। কালো শাড়ির উপর নীল একটা চাদর জড়িয়ে দাঁড়িয়ে আছে নাদিয়া। একটু পরে সুপারভাইজার এসে ডাকতে লাগলো। আমি ওকে নিয়ে গাড়ির সামনে গিয়ে দাঁড়ালাম। নাদিয়া আমার দিকে তাকিয়ে চোখের ইশারায় অনেক কিছু বলতে চাইছে।

আমি ওর কানের কাছে মুখটা নিয়ে বললাম,

-- ঢাকায় গিয়ে তোমার ভার্সিটির আশেপাশে দুজনে থাকার মতো একটা ছোট্ট ফ্যামিলি বাসা খুঁজে বের করবে।

-- কেন?

-- আমাকে বছর খানিক ধরে চট্টগ্রাম থেকে ঢাকা হেড অফিসে বদলি করতে চায়। কিন্তু ঢাকায় যাবার কোনো ইচ্ছে ছিল না তাই রাজি হইনি। তবে এখন তো সেই উপায় নেই, আমি আগামীকাল অফিসে গিয়ে বদলির আবেদন করবো।

নাদিয়া এবার হাসলো। মাঝরাত তবুও ব্যস্ত এই শহরের ব্যস্ত রাস্তায় দাঁড়িয়ে সে সবার সামনে আমাকে জড়িয়ে ধরলো। বাসের সুপারভাইজার অবাক হয়ে তাকিয়ে রইল, আশেপাশের আরো অনেকেই হয়তো তাকিয়ে আছে। আমি সেভাবে জড়িয়ে ধরে বললাম,

-- সবাই দেখছে, এবার ছাড়ো।

-- ইচ্ছে করছে না।

-- তাহলে চলো আমিও সঙ্গে যাই।

-- সত্যি বলছেন?

-- একদম।

আরো একটা টিকিট কেটে আমিও বাসে উঠে গেলাম। নাদিয়ার পাশের সিটের ভদ্রলোককে একবার বলাতেই সে সিট ছেড়ে আমার টিকিটের সিটে চলে গেল।
বাস চলতে আরম্ভ করলো, জানালার পাশে বসা নাদিয়া আমার একটা হাত জড়িয়ে ধরে বসে আছে। অনেকক্ষণ পর সে বললো,

-- আমি ঢাকা থেকে আসার সময় কোনদিন ভাবিনি আপনাকে সারাজীবনের জন্য পাবো।

আমি কিছু বললাম না, ভাবতে লাগলাম কালকে সকালে অফিসে কল দিয়ে বলতে হবে আমি অফিসে যেতে পারবো না। একদিনের ছুটি নিতে হবে।

----- সমাপ্ত -----

গল্পঃ- নাদিয়া।
লেখাঃ- মোঃ আবীদ আবরার।

স্যার I Love You গল্পের লিংক
https://kobitor.com/category/uponas/love/page/3/

কৃমি কোর্স | পাখি ও কবুতর | ডিমের উর্বতায় অবদান | বিস্তারিত এবং ফাইনাল ফিচারঃ পাখি পালনে খুবই গুরুত্বপূর্ণ ব্যপার হচ্ছে...
08/10/2022

কৃমি কোর্স | পাখি ও কবুতর | ডিমের উর্বতায় অবদান | বিস্তারিত এবং ফাইনাল ফিচারঃ

পাখি পালনে খুবই গুরুত্বপূর্ণ ব্যপার হচ্ছে কৃমি নিয়ন্ত্রণ।

-কৃমি কোর্স কি?
উঃ পাখিকে কৃমিমুক্ত রাখার মেডিসিন কোর্স।

- কৃমি কোর্স কেন করবেন?
উঃ
১। পাখির রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাকে সুদৃঢ় রাখতে।
২। ডিমের উর্বরতা ও পাখির ডিম প্রদানের হার হ্রাস পাওয়া থেকে রক্ষা পেতে।
৩। পাখির অন্ত্রে কৃমি ক্ষত সৃষ্টি করতে পারে বলে।
৪। কৃমি হলে পাখি ইরিটেশনে থাকে
৫। পাখির হজমে সমস্যা হয়
৬। মলত্যাগে সমস্যা হয়
৭। বাচ্চা পাখিকে খাওয়ানোর সময় বাচ্চা পাখি মারা যেতে পারে বলে।
৮। বাচ্চা পাখির কোয়ালিটি খারাপ হয়।
৯। পাখি পুষ্টিহীনতায় যেন না ভোগে।
১০। পাখির শরীরে নানা রোগ বাসা বাধে বলে।

পাখি কীভাবে কৃমি দ্বারা আক্রান্ত হয়?
উঃ
১। শাক সবজি
২। পানি
৩। সীডমিএক্স
৪। মানুষ
৫। বাহিরে থেকে আসা এজেন্ট (মানুষ,বন্য পাখি,অন্য পাখি,তেলাপোকা,ইদুর ইত্যাদি)
৬। অপরিষ্কার পার্চ,হাড়ি,ব্রীডিং বক্স,ট্রে,খাঁচা।
এইসব থেকে পাখির শরীরে কৃমির ডিম প্রবেশ করতে পারে।

-কিভাবে বুঝবেন পাখির কৃমি হয়েছে?
উঃ
১। পাখির শরীর শুকিয়ে যাতে পারে।
২। পাখির ওজন হ্রাস পরিলক্ষিত হতে পারে।
৩। বুকের হাড় বেড়িয়ে আসতে পারে।
৩। পাখি বেশি পানি খেতে পারে।
৪। পাখির ট্রেতে ছাতু গোলার মত পায়খানা দেখা যেতে পারে।
৫। পুপসে পানির মাত্রা বৃদ্ধি পেতে পারে।
৬। স্বাভাবিক পুপস দিবেনা।
৫। পায়খানার সাথে কৃমি থাকতে পারে।
৮। পাখির একটিভিটি কমে যেতে পারে।
৯। পাখি খাঁচা বা পার্চের এক কোনে ঝিম মেরে বসে থাকতে পারে।
১০। আবার কখনো কখনো কোন লক্ষণ প্রকাশ ছাড়াই পাখি মাসের পর মাস কৃমি তার দেহে বহন করতে পারে।

** পাখির কৃমি আছে কি না তা সনাক্ত করার প্রয়োজন নেই। ল্যাব টেস্ট ছাড়া কৃমির উপস্থিতি শতভাগ নিশ্চিতও সম্ভব নয়। আসলে বিভিন্ন উতস থেকে প্রাণী মাত্রই পরজীবী দ্বারা আক্রান্ত হয়। তার মধ্যে কৃমি অন্যতম। তাই ৩ মাস পরপর (শীতকালে ২ মাস পরপর) কৃমির কোর্স (মেডিসিন কোর্স) করানো উচিত। অতিরিক্ত গরমে এই কোর্স করাবেন না। এমনি, কোর্স চলাকালীন কোন একদিন অতিরিক্ত গরম হলে সেই দিন কোর্স বন্ধ রাখবেন। (গরম হলে লিভারটনিক বা স্যালাইন দেওয়া গেলেও কৃমির মেডিসিন ও মাল্টিভিটামিন না দেওয়াই উত্তম)

প্রতিরোধ ব্যবস্থাঃ পাখিকে কৃমিমুক্ত রাখার জন্য মেডিসিনের পাশাপাশি যে বিষয়ে লক্ষ্য রাখা উচিত তা হলো-
১। পরিস্কার খাবার, শাক/সবজি ও পানি প্রদান
২। সপ্তাহে ১ দিন নিম পাতা খেতে দেয়া
৩। প্রতি মাসে টানা ৩ দিন নিমের দ্রবণ
৪। সপ্তাহে ২/৩ দিন সজনে পাতা
৫। মাসে ১/২ দিন নিম পাতা ভেজানো পানি (রাতে নিমের পাতা ভিজিয়ে রেখে সকালে পাতা ফেলে সেই পানি পাখিকে খেতে দিন)
৬। মাসে ১ বার রসুন পানি দেওয়া (রসুন পানির উপর বিস্তারিত ভিডিও ইউটিউব চ্যানেল BIRDS CAMP BD তে পাবেন)
৭। নিয়মিত গোসল করানো
৮। বাহিরের এজেন্টের এভিয়ারিতে প্রবেশ নিয়ন্ত্রণ।

প্রতিকারঃ নিমপাতা, রসুন পানি ইত্যাদি কৃমি প্রতিরোধে ভূমিকা রাখলেও বেশির ভাগ ক্ষেত্রে কেমিক্যাল বেশি উপযোগী। আর কৃমির সংক্রমণ একবার বেশি হয়ে গেলে নিমপাতা বা রসুনপানি বেশি কার্যকরী ভূমিকা রাখতে পারেনা। তখন নিমোক্ত মেডিসিন প্রয়োগ করা উচিত।

কি কি মেডিসিন লাগেঃ
-এভিনেক্স (লিভামিজল হাইড্রোক্লোরাইড গ্রুপ) অথবা

-এসিমেক ১% ওরাল সলিউশন (আইভামেকটিন গ্রুপ)

এছাড়াও প্যারাভেট ব্যবহার করা যেতে পারে।

- লিভাভিট/লিটাটন (লিভারটনিক যেকোন কোম্পানির)
-ভেট স্যালাইন (যেকোন কোম্পানির)
-রেনা ডব্লিউ এস (মাল্টিভিটামিন)

উল্লেখ্য, ব্রিডিং কোর্সের আগে কৃমি কোর্স করানো অতি অতি প্রয়োজনীয়। এতে ভাল ব্রীডিং আশা করা যায়।

কিভাবে কোর্স করাবেন?
উঃ
-প্রথম ৩ দিন লিভাটন ১মিলি/লিটার (৬ ঘন্টা পর স্বাভাবিক পানি দিবেন)।

তৃতীয় দিন লিভাটন ৬ ঘন্টা রাখার পর খাচায় আর কোন পানি দিবেন না যেন ৪র্থ দিন পাখি এভিনেক্স/এসিমেক মিশ্রিত পানি বেশি পান করে।

-৪র্থ দিন এভিনেক্স ১গ্রাম/লিটার অথবা এসিমেক ১মিলি/লিটার অথবা পেরাভট ১গ্রাম/লিটার পানিতে মিশিয়ে পাখিকে খেতে দিন (সকাল সকাল ৭-৮ টার মধ্যে পানি দিন, ৩ ঘন্টা পর সেই পানি সরিয়ে ফেলুন)।
কৃমি মেডিসিনের তিতকুটে স্বাদের জন্য পাখির বমি ভাব বা পাতলা পায়খানা হতে পারে। তাই ঐদিন ২য় ধাপের পানিতে ইলেকট্রোমিন স্যালাইন ১ গ্রাম/লিটার মাত্রায় পাখিকে খেতে দিন। স্যালাইন মিক্সড পানি ৬ ঘন্টা পর ফেলে দিন। (উপরের উল্লেখিত মেডিসিন গুলো প্রতি তিন মাসে বাই রোটেশনে দিতে পারেন, এতে বিভিন্ন রকম কৃমির উপর ভিন্ন ভিন্ন গ্রুপের মেডিসিনের ভাল কার্যকারিতা পাবেন। সে ব্যপারে বিস্তারিত ফিচার পাবেন BHB গ্রুপের ফাইল সেকশনে। যা রোমেল ভাইয়ের দীর্ঘদিনের অভিজ্ঞতার আলোকে লিখা)

-৫ম ও ৬ষ্ঠ দিন পুনরায় লিভাটন ১মিলি/লিটার পানিতে সকালে খেতে দিন। ৬ ঘন্টা পর পানি ফেলে স্বাভাবিক পানি দিবেন।

-৭ম দিন ইলেকট্রোমিন ১গ্রাম/লিটার পাখিকে খেতে দিন। ৬ ঘন্টা পর ফেলে দিয়ে স্বাভাবিক পানি দিন।

-পরবর্তী ৪/৫ দিন মাল্টিভিটামিন ১ গ্রাম/লিটার পাখিকে খেতে দিন। ৬ ঘন্টা পর পানি ফেলে দিয়ে স্বাভাবিক পানি দিন।

এরপর ৪/৫ দিন গ্যাপ দিয়ে ব্রীডিং কোর্স স্টার্ট করতে পারেন।

⚠ সাবধানতাঃ
১. বাচ্চা পাখির বয়স কমপক্ষে ৬০দিন না হলে কৃমি কোর্স করাবেন না।
২. অত্যাধিক গরমের দিনে দিবেন না।
৩. ডিম দিচ্ছে বা দিবে এমন পাখিকে দিবেন না।
৪. আঘাত প্রাপ্ত পাখিকে দিবেন না।
৫. অন্য কোন রোগের ট্রিটমেন্ট চলাকালীন দিবেন না।
৬. আপনি অনভিজ্ঞ হলে কৃমি কোর্স করার আগে আপনার এলাকার অভিজ্ঞ কারো সাথে আলাপ করে নিন।
৭. বাচ্চা বড় করছে এমন পাখিকে দিবেন না।

এই ফিচারকেই ১০০% পারফেক্ট বা স্টান্ডার্ড ভাবার কোন দরকার নাই। আপনি যদি আস্থা রাখতে পারেন তাহলে অনুসরণ করবেন। না আস্থা পেলে আপনি অভিজ্ঞ কারো সাজেশন ফলো করবেন।

লেখকঃ
শাফি আহমদ বস

ব্রিডিং কোর্সঃ- 👉ব্রিডিং কোর্স করানোর আগে কৃমির কোর্স করানোটা জরুরি, যদি তিনমাসের মধ্য কৃমির কোর্স করিয়ে থাকেন তাহলে সরা...
07/10/2022

ব্রিডিং কোর্সঃ-

👉ব্রিডিং কোর্স করানোর আগে কৃমির কোর্স করানোটা জরুরি, যদি তিনমাসের মধ্য কৃমির কোর্স করিয়ে থাকেন তাহলে সরাসরি ব্রিডিং কোর্স শুরু করবেন।

👉 কৃমির কোর্স ৫ দিনঃ

★প্রথম এবং দিতীয় দিন Liver Tonic দিবেন ১মিলি ১ লিটার পানিতে (আমি liva vet ব্যবহার করি). পানি ৫/৬ ঘন্টা রাখবেন খাচায় এরপর ফ্রেশ পানি দিবেন।

★তৃতিয়দিন Avinex দিবেন ১গ্রাম পাউডার /১ লিটার পানিতে, পানি ২/৩ ঘন্টা খাচায় রাখবেন এরপর ফ্রেশ পানি দিবেন।

★চতুর্থ ও পঞ্চম দিন উপরের নিয়মেই লিভার টনিক দিবেন, ১ মিলি/১লিটার পানিতে।

👉 এরপর ২ দিন ফ্রেশ পানি দিবেন।

★পাখি ব্রিডে দিলে প্রচুর ক্যলসিয়াম এবং ভিটামিনের প্রয়োজন হয় এজন্য Calplex বা Calfast 2.5ml+ADE3 বা রেনাসল এডিই বা এডিসল ভেট 1ml /১লিটার পানিতে মিশিয়ে খেতে দিবেন ৫ দিন। পানি ৬ঘন্টা রাখা যাবে খাচায় এরপর ফ্রেশ পানি।

★পাখি ডিম দিলে Hiprachok amino বা BoostBreed-N বা Vital Amino forte ব্যবহার করবেন ১মিলি /১ লিটার পানিতে ৫ দিন।পানি ৬ঘন্টা রাখা যাবে এরপর ফ্রেশ পানি।

★বাচ্চা ফোটার ১৫ দিন পর থেকে পালক সুন্দর হওয়ার জন্য Zis vet বা Ozinc ১ মিলি ১ লিটার পানিতে ৫ দিন দেন। পানি ৫/৬ ঘন্টা রাখতে পারেন খাচায় এরপর ফ্রেশ পানি।

নোটঃ উপরে উল্লেখিত সব মেডি*সিন মিশ্রিত পানি প্রতিদিনের ব্যবহার শেষে বাকিটা ফেলে দিয়ে পরের দিন নতুন করে আবার মিশিয়ে তারপর পাখিদের দিতে হবে।

ফিঞ্চ পাখির ঠান্ডা লাগলে করনীয় চিকিৎসা পদ্ধতিঃ ১। মোটা কাপর বা রুমাল খাচার সাথে ছবির মত ঝুলিয়ে দিতে হবে। খাঁচার  সাথে এক...
07/10/2022

ফিঞ্চ পাখির ঠান্ডা লাগলে করনীয় চিকিৎসা পদ্ধতিঃ

১। মোটা কাপর বা রুমাল খাচার সাথে ছবির মত ঝুলিয়ে দিতে হবে। খাঁচার সাথে একটি বাল্পের ব্যাবস্তা করা। অথবা সূর্যের আালোতে রাখা।

২। ফিঞ্চ পাখির ঠান্ডা লাগলে ২৫০ মিলি পানিতে ২.৫ মিলি Acv মিশিয়ে ৫ দিন খাওয়াতে পারেন। ফিঞ্চ এর মল রোগ নির্নয়ে বিশেষ ভূমিকা রাখে।

৩। আদা, তুলশিপাতা পানিতে সিদ্ধ করে সেই পানি স্বাভাবিক তাপমাত্রায় আসার পর ফিঞ্চ কে খাওয়ার জন্য দিতে পারেন।

৪। ২৫০ মিলি হালকা গরম পানিতে ১ চা চামচ মধু মিশিয়ে দিতে পারেন।

Address

KutubPur, Paghla
Narayanganj
1400

Telephone

+8801676767217

Website

Alerts

Be the first to know and let us send you an email when Tuna's Mini Aviary posts news and promotions. Your email address will not be used for any other purpose, and you can unsubscribe at any time.

Videos

Share

Category



You may also like