23/12/2021
শীতকালে পোষা পাখির যত্ন
আগে থেকে কিছু প্রস্তুতি নিয়ে রাখলে শীতকালে পাখিদের ঠান্ডার প্রকোপ থেকে এবং বিভিন্ন সমস্যা/রোগ থেকে রক্ষা করা যাবে খুব সহজেই, রোগের চিকিত্সাও অনেক সহজ হয়ে যাবে। প্রস্তুতি রাখুন যেন নিচের পদক্ষেপগুলো শীত আসতেই নেয়া সম্ভব হয়।
শীতকালে পোষা পাখির যত্ন -
১। পাখির খাঁচা বা এটি যে রুমে থাকে তার তাপমাত্রা যেন কোনভাবেই ৬৫ ডিগ্রি ফারেনহাইট বা ১৮ ডিগ্রি সেলসিয়াসের নিচে নামতে দেয়া যাবেনা|পাখির খাঁচা এমন জায়গায় রাখতে হবে যাতে সরাসরি ঠাণ্ডা বাতাস না লাগে। প্রচণ্ড ঠাণ্ডা অথবা শৈত্য প্রবাহ চলাকালীন সময়ে ঘরের জানালা দরজা ঠিক ভাবে বন্ধ রাখতে হবে আর যারা বারান্দায় পাখি রাখেন তাদের অবশ্যই বারান্দা পলিথিন বা তাবুর কাপড় বা ত্রিপল দিয়ে ঢেকে দিতে হবে।
২। প্রতিদিন পাখির খাঁচা ২-৩ ঘণ্টা এমন ভাবে রোদে রাখুন যাতে খাঁচার এক পাশে রোদ লাগে এবং অন্য পাশে ছায়া থাকে।রোদ না থাকলে বা ঠান্ডা বেশি হলে খাচার বাইরে একটা ৬০ ওয়াট বাল্ব /হারিকেন জালিয়ে রাখুন। পাখিকে গরম রাখার জন্য কোন ভাবেই আগুন/কয়লা ব্যবহার করা যাবে না। পাখির রেসপিরেটরি সিস্টেম (শ্বাসতন্ত্র)অত্যন্ত সংবেদনশীল। এরা ধোঁয়া সহ্য করতে পারে না। এছাড়াও বেশ কিছু হিটার আছে যাতে ননস্টিকি আবরণ না থাকার ফলে ধোঁয়া উৎপন্ন হয় আবার কিছু গ্যাস/কেরসিন হিটার আছে যা থেকে এক ধরণের গ্যাস তৈরি হয় যা আপনার পাখির জন্য প্রাণঘাতী হতে পারে। কিছু রুম হিটার এবং এনিম্যাল হিটার আছে যা ব্যবহার করা নিরাপদ কিন্তু অবশ্যই সতর্কতার সাথে ব্যবহার করতে হবে এবং পাখির খাঁচার থেকে দূরে স্থাপন করতে হবে।
৩।রাতের বেলা পাখির খাঁচা অবশ্যই মোটা কাপড় বা হালকা কম্বল দিয়ে ঢেকে দিতে হবে এবং খেয়াল রাখতে হবে যাতে বাতাস চলাচলের জন্য কিছু জায়গা থাকে(উপর থেকে ৩/৪ অংশ ঢাকা এবং নিচের ১/২ অংশ খোলা)। (আগে থেকেই কিছু পাতলা কম্বল কিনে রাখুন )
৪। মধু, আদা, তুলসি পাতা, পুদিনা পাতা এবং অপরিশোধিত এপেল সিডার ভিনেগার (Unfiltered ACV) পাখির ঠাণ্ডা প্রতিরোধ করে এবং পাখির ঠাণ্ডার চিকিৎসায় ব্যবহৃত হয়। এগুলোর পাশাপাশি নিয়মিত টাটকা শাক সবজি ও ফলমূল পাখির রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে। তুলসির দ্রবন প্রতি ২ সপ্তাহে ৩ দিন ব্যবহার করা যাবে।তুলসির দ্রবন রেসিপি : ৫ থেকে ৬ টি তুলসি পাতা ভাল করে ধুয়ে নিন। এর পরে ১ কাপ পরিমাণ ফুটন্ত পানিতে পাতাগুলো দিয়ে ২ মিনিট এর মত চুলায় রাখুন। নামানোর আগে ১/৮ (চাচামচের ৮ ভাগের ১ ভাগ) আদা কুঁচি দিয়ে ১ মিনিট রেখে চুলা থেকে নামিয়ে ফেলুন। এর পর দ্রবনটি সম্পূর্ণ রূপে ঠাণ্ডা হলে ১/৪(চা চামচের ৪ ভাগের ১ ভাগ) মধু যোগ করে ভাল করে মিশিয়ে নিন। এখন দ্রবণটি পাখিকে খেতে দেয়ার জন্য তৈরী।দ্রবণটি ৬ ঘণ্টা পর্যন্ত পাখির খাঁচায় রাখা যাবে।
৫। শীতকালে পাখির সীডমিক্সে তেল জাতীয় বীজ যেমন তিল/গুজি তিল, সূর্যমুখীর বীজ, ক্যানারি এর পরিমাণ বাড়িয়ে দিন।সীড মিক্স এ কিছু সরিষা দানা যোগ করুন।
৬। পাখির খাঁচা, খাবারের পাত্র এবং পানির পাত্র নিয়মিত পরিষ্কার করুন এবং প্রতিদিন পরিষ্কার পাত্রে তাদের বিশুদ্ধ পানি ও খাবার খেতে দিন। এতে করে আপনার পাখি ব্যাকটেরিয়া অথবা ফাঙ্গাস এর আক্রমন থেকে সুরক্ষিত, সুস্থ ও সবল থাকবে যার ফলে হঠাৎ করে ঠাণ্ডা লাগার ভয় কমে যাবে।
৭। পাখির ঠান্ডার প্রাথমিক চিকিত্সায় তুলসী দ্রবণ, কাচা তুলসী পাতা, কাচা পুদিনা পাতা একটানা ৫-৭ দিন দিতে হবে এবং উপরের পদক্ষেপ গুলো মেনে চলতে হবে।৭ দিন পর যদি ঠান্ডা পুরোপুরি না সারে অথবা হাপানি/লেজ উঠা নামা থাকে তাহলে BRAGG ACV মেশানো পানি দিতে হবে একটানা ৭দিন