10/03/2021
(টিক ও টকের ভালোবাসা)
এইতো কিছুদিন আগেই আমি শখের বশে পালার জন্য একটি গিনিপিগ কিনে নিয়ে আসি। এখন, জেনে নেই গিনিপিগ কি? জৈবরসায়নবিদগণ গবেষণা করে দেখিয়েছেন যে, গিনিপিগের আদি বাসস্থান হচ্ছে আন্দেস পর্বতমালায়। ক্যাভি প্রজাতির সাথে এদের নিবিড় সম্পর্ক রয়েছে। গৃহপালিত প্রাণী হিসেবে এদের পরিচিতি রয়েছে। মূলতঃ এ জন্যই এদের সচরাচর বন্য পরিবেশে দেখা যায় না। শখ করে মানুষ বাসায়ই এদের পালন করে থাকে। খরগোশের মতো দেখতে, কিন্তু কানগুলো খরগোশের থেকে সাইজে অনেক ছোটো। খরগোশের চেয়ে বেশি সৌখিন ভাবেই গিনিপিগ পালন করা হয়। প্রজাতিগত দিক থেকে এদের একরকম মনে হলেও দুটো প্রানি সম্পূর্ণই আলাদা। বর্তমানে প্রায় অধিকাংশ বাড়িতেই শখের বশে গিনিপিগ পালন করা হয়। আমি যে গিনিপিগ টা কিনে নিয়ে আসি, সেটার একটা নামও রেখেছি আমি। নামটা হচ্ছে টিক(Male)।
টিক বলে ডাকলে আমার গিনিপিগটা সারাও দেয়। যখন তাকে টিক বলে ডাকি, তখন খুব চিল্লাচিল্লি করে। মনে হয় সে বুঝাতে চায়, কেনো? এই নামই কেনো? আর কোনো নাম কি ছিলো না?সে যাই ভাবুক। আমি যেহেতু ডাকবো, আমি কি নামে ডাকবো, সেই সিদ্ধান্ত ও আমার। টিক নামটা একটু অদ্ভুত টাইপের যদিও, কিন্তু আমি এই নামেই ডাকতে স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করি।
এভাবে ভালোই কাটছে টিককে নিয়ে আমার দিনকাল। কাঁচা ঘাস এদের প্রধান খাদ্য। আমি প্রতি দিন টিকের জন্য কিছু ঘাস কাটি, তাকে খাওয়াই, ভালোই লাগে। বেকার হলে যা হয় আর কি। বর্তমানে পড়ালেখার এতো চাপ নেই, তার উপর গ্রেজুয়েশন ও শেষ করা হয়নি, কোনো জব ও করছি না, এটাই আমার কাছে প্রতি দিনের জবের মতোই মনে হয়।
টিককে কিনে নিয়ে আসার পর থেকে তাকে নিয়ে বের হইনি কখনো। আজ বিকেলবেলা তাই বের হবো ভাবছি। বাড়ির পাশেই একটা মাঠ রয়েছে, মাঠের পাশে প্রচুর সবুজ ঘাস বিস্তৃত। টিককে নিয়ে গেলাম মাঠে, মাঠের পাশে নামিয়ে দিলাম। সে তো প্রচুর খুশি, এতো ঘাস দেখে তার ভালো না লেগে উপায় আছে? মাঠের পাশে যতদূর চোখ যায় শুধু সবুজ ঘাস আর ঘাসই দেখা যায়। আমি ঘাস দেখতে দেখতে ঐদিকে টিক ঘাসের মধ্যে মিলিয়ে গেছে। অনেক খোজা খুজির পরও পেলাম না। এতো বড় ক্ষেতের মধ্যে, কোথায় খুজবো? খুব কষ্ট হচ্ছে, টিককে না নিয়েই বাসায় ফিরতে হলো।
২ দিন পার হয়ে গেলো টিককে প্রতিদিনই আমি খুজতে যাই, কিন্তু পাই না। খুব মন খারাপ আমার, কারণ আমি টিকের আশা ছেড়েই দিয়েছি। শিয়াল কুকুর, বিড়াল, এদের জন্মগত শত্রু। ওরা দেখলেই টিকের আর রক্ষা নেই। এখন সারাদিন সারারাত ঘুমে ঘুমেই কেটে যায়। খুব মনে পড়ে টিককে। টিক থাকলে কাউকে "বাবু খাইছো?" বলতে হতো না। টিককেই বলতে পারতাম।
"তিতলি কি পারবে আমার টিককে আমার কাছে খুজে এনে দিতে"?
যাইহোক এভাবে দেখতে দেখতে দুই দিন কেটে গেলো।
আজ খুব ভোরবেলা ঘুম থেকে উঠলাম। গত দুইদিন উঠিনি, টিক এর জন্য মন খারাপ ছিলো বলে বেলা করেই ঘুমিয়ে ছিলাম। টিক থাকতে খুব ভোরেই উঠতে হতো, আর ওকে খাবার দিতে হতো। আজও খুব ভোরে উঠে পরেছি, মনে ছিলো না টিক যে নেই। ব্রাশ করতে করতে বাহিরে গিয়ে আমি তো রীতিমতো 'থ' হয়ে গেছি। "আরে টিক যে, তুমি এয়েছো"? " তারপর বলো" এই দুইদিন কোথায় ছিলে? কোনো উত্তর না দিয়ে চোখের সামনে গুটিশুটি পায়ে বসে আছে সে। কিন্তু এ কি এলাহী কান্ড, টিক তো একা না, সাথে অন্য একজন নতুন গিনিপিগ। নতুন গিনিপিগ টার নাম জানিনা। কোথা থেকে এলো? টিক ওকে কোথায় পেলো? এই দুই দিন কি তারা এক সাথেই ছিলো? এটা কার গিনিপিগ? সেও কি আমার টিকের মতো হারিয়েই গেছে? এসব প্রশ্ন মাথায় ঘোরপাক খাচ্ছে। আমি টিককে জিজ্ঞাসা করলাম- কিরে? কই ছিলি এই দুইদিন, আর সাথে এটা কারে নিয়া আসছোস? দেখি মাথা নিচু করে আছে তারা। তৎক্ষণাৎ আমি নতুন আসা গিনিপিগের Gender চ্যাক করলাম দেখি, ওমা একি, এ তো দেখি Female.আমি তো পরে গেলাম মহা টেনশনে।
আমি টিককে বললাম- টিক ও কে সত্যি করে বলো তো আমায়, তোমরা আবার "নাসির আর সুবহার মতো Just Friend নও তো? টিক তোমার "লজ্জা লাগা দরকার" সে কোনো উত্তর দিলো না। মাথা নিচু করে দাড়িয়ে আছে, সাথে নতুন গিনিপিগটাও। লক্ষ্য করলাম তারা কি যেনো বলতে চাচ্ছে, কিন্তু ওদের তো ভাষা বুঝি না। হয়তো বা আমাকে এটাই বুঝাতে চাচ্ছে মেনে নাও আমাদের। যেমনটা, মানুষেরা মানে ছেলে মেয়ে একসাথে পালিয়ে গিয়ে কিছুদিন বাহিরে থেকে তারপর বাসায় ফিরে অভিভাবকদের কাছে যেমন ভাবে আকুতি মিনতি করে তেমনটাই তাদের চাহনি ছিলো। আমি তো ছেড়ে দেওয়ার মতো অভিভাবক না। বললাম তোদের একসাথে রাখা যাবে না, আমার বিবেকে বাধা দিবে, তোদের বিয়ে দিয়ে দিবো, তারপর থেকে না হয় একসাথে থাকিস। তারা তো মহাখুশি, মুখ দেখেই সেটা আন্দাজ করলাম, দৌড়ে গিয়ে টিক নতুন গিনিপিগটাকে ফুল দিয়ে প্রোপোজ ও করে বসলো। ওরে প্রেম তাদের বিয়ে আটকায় কে?
ব্যাপারটা "হাইস্যকর" মনে হলেও তাদের বরন করলাম, বিয়ের বন্দোবস্ত করলাম, মহা ধুমধাম করে বাসার আশেপাশের কিছু পিচ্চির দল নিয়ে বিয়ের কার্যও সম্পাদন করে ফেললাম। এইবার তারা স্বীকৃতিপ্রাপ্ত স্বামী স্ত্রী। বাক্স ফুল দিয়ে সুন্দর করে সাজিয়ে, একসাথে তাদের একটা বাক্সে রেখে দিলাম। এইবার শান্তি লাগতেছে কারন, এখন এরা একে অপরকে "হাত দিয়ে ছুইলেও আমার দুঃখ হবে না"! ওরা এখন নিশ্চিন্তে বাঁসর করুক।
এইবার আমি একটু স্বস্তি পেলাম। ফ্রেশ হয়ে আমি সকালের নাস্তা করতে গেলাম, ওদের বিয়ে উপলক্ষে বাসায় বিরিয়ানি রান্না হয়েছে। তাই আমি এখন বিরিয়ানি খাবো, "উমমমম, কুব ট্যাশ" "আপনারা কেউ কাবেন"? "ঢেলে দেই"? দুঃখিত বিরিয়ানি ঢালা যায় না, বেড়ে দেই? খাওয়া শেষ করে আমার রুমে এসে শুয়ে পরলাম। চোখ বন্ধ করে শুয়ে আছি, আর ভাবছি, আচ্ছা আমি যে আমার টিকের সাথে ঐ গিনিপিগটার বিয়ে দিয়ে দিলাম, গিনিপিগটা আবার "তামিমা তাম্মির" মতো নয় তো? যদি "রাকিব" এর মতো তার অন্য কোনো স্বামী এসে আমদের নামে কেস মামলা করে?
এসব ভাবতে ভাবতেই কেমন যেনো লাগছে। তবে এটা সত্যি যে, আমার টিকের চরিত্র "নাসিরের" মতো না। আমি ওদের বিয়ে দিয়ে ভুল করলেও, না জেনে একটা ভুল করে ফেলেছি হয়তো। শুধুমাত্র ওদের ভালোর কথা ভেবেই, বৈধভাবে একসাথে রাখার জন্য। আবার এটাও ভাবছি, এমন তো নাও হতে পারে। এমন সময় দরজায় কে জেনো কড়া নাড়ছে, ভিতর থেকে আমি জিজ্ঞাসা করলাম কে?
শুনশান নিরবতা। কোনো উত্তর আসলো না, আবার কড়া নাড়ছে, গিয়ে দরজাটা খুললাম, খুলে দেখি ওমা একি, "ভাইরে ভাই কে তুমি"? একটা অপরুপ সুন্দরী এক মেয়ে দাড়িয়ে আছে, একে তো আগে কখনোই এই এলাকায় দেখিনি, সম্ভবত কারো বাসায় বেড়াতে এসেছে। পড়নে লাল রংয়ের এক জামা, কপালে টিপ, চোখে কাজল দেওয়া। প্রথম দেখায় যে কেউই উনার প্রেমে পড়ে যাবেন, এতো সুন্দর ছিলো যে প্রশংসা করেও বুঝানো যাবে না, একদম হুরপরীদের মতো। আমার তো দিলে লাড্ডু ফুটগায়া, বললাম কি চাই? এখানে কি?ভেবেছিলাম তিনি মৃদুস্বরে আমার করা প্রশ্নের উত্তর দিবেন। কিন্তু না ব্যাপারটা ঘটলো সম্পূর্নই তার উল্টো। উচ্চস্বরে উত্তর দিলেন-
আপনি নাকি আমার টককে বিয়ে দিয়েছেন? কার সাথে? আমি তো কিছুই জানলাম না। আমি বললাম আপনার টক? সেটা আবার কে? কে বলছে আপনাকে এসব কথা, তখন মেয়েটি বললো, এইতো আমি দুই দিন ধরেই আমার টককে খুজছি, ঐদিন সকালে ঘাস খাওয়াতে নিয়ে একটু বের হয়েছিলাম, কিন্তু হারিয়ে যায়, অনেক খুজেও পাইনি। এই দুইদিন ধরে খুজেই যাচ্ছি। আপনাদের বাসার সামনে এক পিচ্চির দলকে জিজ্ঞাসা করলাম আমার টককে দেখেছে কিনা, তারা যদিও প্রথমে বুজেনি, কিন্তু তাদের বুঝানোর জন্য খরগোশের মতো দেখতে, কান ছোটো, এক ধরনের গিনিপিগ সব বিস্তারিত বর্ণনা করে বুঝালাম, তারপর ওরা বললো, ওহ আমরা তো এখন আপনার টকেরই বিয়ের দাওয়াত খেয়ে এসেছি। এই জন্যই আপনার কাছে আসলাম। কোথায় আমার টক?
উনার কথা শুনে যা বুঝলাম, গিনিপিগটা উনারই। নাম টক, কিন্তু ওদের যে এখন বাসর হচ্ছে সেটা কিভাবে বলি উনাকে? মেয়েটাকে জিজ্ঞাসা করলাম আচ্ছা আপনার টকের কি বিয়ে হয়েছে আগে? উনি বললো না, তবে দেখাদেখি চলছে। আমি স্বস্তি পেলাম এই ভেবে যে, যাক বাবা কোনো কেস মামলার ঝামেলায় তো পরতে হবে না। মেয়েটা বললো, কই তাড়াতাড়ি নিয়ে আসুন টককে। আমি মেয়েটিকে বললাম, দেখেন ম্যাম ওদের তো আমি বিয়ে দিয়েই ফেলেছি, এখন তো শর্তমতে টকের এখানেই থাকার কথা। মেয়েটা রেগে গেলো, আর বললো "উফ বুঝলাম না" কি বলেন এসব? জামাই কে দেখলামই তো না এখনো। না দেখে টককে কিভাবে তুলে দিবো আমি? আমার অনেক কিছুই দেখার আছে, জানার আছে। মেয়েটাকে বুঝালাম আমি, দেখেন একটু আগেই ওদের বিয়ে হলো, হয়তো এখন হানিমুন এর প্লান করছে। বা একান্তে সময় কাটাচ্ছে, এখন কি ওদের বিরক্ত করা উচিত বলে আপনার মনে হয়?
মেয়েটা আমার কথা বুঝলো, আর বললো সত্যিই তো। "এভাবে তো ভেবে দেখিনি" তারপর মেয়েটা বললো, আচ্ছা আপনার গিনিপিগ এর নাম কি? আমি বললাম টিক। সে বললো বাহ, ওদের নামেও তো কতো মিল। আচ্ছা আপনার টিক কি আপনার মতোই সুন্দর?
"আ্যহ" আমি তো লজ্জায় শেষ, এ কি বলে মেয়ে, আমি নাকি সুন্দর, মনে মনে এই গানটা বেজে উঠছে, "মে ইতনি সুন্দার হুমে কিউহু" তারপর মেয়েটাকে বললাম আচ্ছা আমরা বসে কথা বলি, বাহিরে কতক্ষন দাড়িয়ে থাকবেন, ভিতরে আসুন বসুন। মেয়েটি আমার রুমের ভিতরে আসলো, খাটে বসলো, আমিও বসলাম। এইবার আমাকে জিজ্ঞাসা করছে আচ্ছা ওরা ঐদিকে প্লান শেষ করুক, আমরা ততক্ষণে ওদের ব্যাপারে জেনে নেই। কিভাবে খুজে পেলেন ওদের? কখন খুজে পেলেন, বিয়েটা কিভাবে দিলেন। সবগুলো প্রশ্নের উত্তর আমি এক এক করে দিয়ে যাচ্ছি। আর ঐদিকে বাহিরে তো চিল্লাচিল্লির আওয়াজ। গ্রামের মুরুব্বি ও এলাকার কিছু লোকজন আমাদের বাসায় এসে হাজির। স্পষ্ট শুনলাম তারা বলাবলি করছে, আমি নাকি তাদের মেয়েকে নিয়ে পালিয়ে গেছি, কি মহা বিপদে পরলাম রে বাবা, এখন এ থেকে উদ্ধার হবো কিভাবে? কয়েকজন আমার রুমে ঢুকে পরলো আর দেখলো আমরা দুজন খাটের উপর বসে আছি। "আমি কি কাউকে গালি দিয়েছি? দেইনি, কিন্তু ওরা দিচ্ছে। "আমি কি কারো বিরুদ্ধে কথা বলেছি"? বলিনি, কিন্তু ওরা বলেই যাচ্ছে। এখন ওদের বিশ্বাস করাবে কে? যে "আমি কোনো অনৈতিক কাজ, আজকে কেনো জীবনেও করি নাই"। শেষ এইবার আমি, শেষ পর্যন্ত এভাবে মুখে চুনকালি পরলো? এর চেয়ে তো ভালো ছিলো " হিরো আলমের গান" শুনে মরে যাওয়া।
এখন গ্রামের মুরুব্বি ও এলাকার লোকদের সিদ্ধান্ত হলো, যেহেতু আমাদের নিয়ে পালিয়ে যাওয়ার ঘটনা রটেছে, এবং এক সাথে একই ঘরে দুজনকে পাওয়াও গিয়েছে সেহেতু আমাদের বিয়ে করিয়ে দিবে। হুম, এটাই স্বাভাবিক, সন্দেহের বশে আমি নিজেই টিক আর টকের বিয়ে দিয়ে দিলাম, আর এলাকার লোকজন সন্দেহ করে আমাদেরকে এমনি এমনি ছেড়ে দিবে? "বাবা তোমার দরবারে সব পাগলের খেলা"
মেয়েটাকে জিজ্ঞাসা করলো বিয়েতে রাজি কিনা, সে জবাব দিলো রাজি। একদম লাল জামা পরে যেমন বিয়ের সাজেই এসেছে, এটা দেখে আমার খুব রাগ হলো। কে যেনো আবার একটা লাল টুকটুকে ঘুমটাও এনে দিয়েছে, সেটা দেখে আমার আরো রাগ হলো। মেয়েটা কেমন? একবার বলাতেই রাজি হয়ে গেলো, কোনো আপত্তিও জানালো না। কিন্তু কই আমাকে তো জিজ্ঞাসাই করেনা, হয়তো আমার রাজি হওয়া বা না হওয়াতে কিছুই যায় আসে না। আমাকে তো বিয়ে করতেই হবে। কাজি ডেকে বিয়ে করিয়েও দিলো। এভাবে কপালে বিয়ে লেখা ছিলো সেটা কখনো কল্পনাও করিনি। যাইহোক তবুও তো বিয়ে, এই ধ্রুব সত্যিটা তো মানতেই হবে।
এখন আমাদের ফুলশয্যা হবে। হুম ঠিকই শুনেছেন। বিয়ে হয়েছে ফুলশয্যা হবে না? ঐদিকে টিক আর টক ফুলশয্যা করছে আর এই দিকে আমরা করবো। রুমের দরজা আটকিয়ে গিয়ে খাটের উপর বসলাম, আস্তে আস্তে ঘোমটা খুললাম, চেহারাটা এখন ঝাপসা লাগছে, আস্তে আস্তে কাছে যেতেই শুনতে পেলাম, বাহির থেকে ছোটবোন ডাকতেছে, ভাইয়া গোসল করবি না? দুপুর হয়ে গেছে যে। তাড়াতাড়ি উঠ। ছোটো বোনের উপর খুব রাগ হলো, একটু পর ডাকলে কি এমন ক্ষতি হতো? বুঝতে পারলাম এতক্ষণ যা ঘটেছে সব স্বপ্ন ছিলো। দৌড়ে গিয়ে টিক আর টককে দেখতে যাই ঠিক আছে কিনা, কই ওরা তো ঠিকই আছে। তাহলে এতক্ষণ এসব স্বপ্ন ছিলো কেনো?
টিক আর টককে বললাম, তোরাই ভালো রে, ঘাস খাস শুধু, আজ যদি আমার সত্যি সত্যিই বিয়ে টা হতো বউ কি ঘাস খেয়ে থাকতে পারতো? বউ ঘাস খায় না, তাই আমারো সংসার করা হয় না, তোরা ঘাস খাস, তোরাই সংসার কর। তাও আবার কাজ করার কোনো প্যারা নাই তোদের, ঘাস ও আমিই কেটে এনে দেই, তোরা শুধু খাস। সংসারের প্রয়োজনীয় সবকিছু যদি আমাকেও কেউ এভাবে এনে দিতো, তাহলে হয়তো তোদের মতো আমারও সংসার করা হতো। টিক আর টক একে অপরের দিকে তাকিয়ে সে কি চাহনি। মনে হচ্ছিলো তারা একটা সুখী দম্পতি সেটাই আমাকে বুঝানো লাগবে। এই দিকে আমার দিল ফাটগায়া। ওদের এই রোমাঞ্চকর দৃশ্য কেমেরা বন্ধি না করলে হয়? তাই টিক আর টককে নিয়ে একটা টিকটক ভিডিও বানিয়ে ফেললাম। সাথে সাথে ভিডিওটা টিকটকে পোস্ট ও করে দিলাম, মূহুর্তের মধ্যে ভিডিওটা ভাইরাল হয়ে গেলো। হাজার হাজার ভিউস, লাভ, রিয়েকশন, ভিডিওর কমেন্ট সেকশন কমেন্টে ভরে গেলো। এর মধ্যে একজনের কমেন্টস দেখলাম, টকের আসল নাম নাকি "লাইকি" আর লাইকি নাকি উনারই। দুদিন আগে হারিয়ে গেছে। আমি কমেন্টস টা "দেখেও না দেখার ভান করে আছি" তোমরা সবাই "তাকে বলে দিও" স্বপ্নের বিয়ের অভিজ্ঞতার কথা আমার মাথায় এখনো ঘুরপাক খাচ্ছে... নতুন করে আর কোনো ঝামেলায় পরতেও চাচ্ছি না। 🙂