21/10/2024
পোল্ট্রি ফিডে মাল্টিভিটামিনের অভাব হলে বিভিন্ন ধরনের শারীরিক সমস্যা এবং উৎপাদন কমে যাওয়ার ঝুঁকি থাকে। এখানে উল্লেখ করা হলো মাল্টিভিটামিন না থাকলে কী ধরনের ক্ষতি হতে পারে:
1. বৃদ্ধির ঘাটতি:
ভিটামিনের অভাব মুরগীর সঠিক বৃদ্ধি এবং শারীরিক উন্নয়ন বাধাগ্রস্ত করে। ফলে বাচ্চা মুরগীর বৃদ্ধি ধীর হয় এবং প্রাপ্তবয়স্ক মুরগীর শরীর দুর্বল হতে পারে।
2. হাড়ের সমস্যার সম্ভাবনা:
বিশেষ করে ভিটামিন D3 এবং ক্যালসিয়ামের অভাবে মুরগীর হাড়ের গঠন দুর্বল হয়, রিকেটস হতে পারে, যা হাড়ের ভঙ্গুরতা বাড়ায়।
3. ডিম উৎপাদনের সমস্যা:
ভিটামিন A, D3, এবং E-এর অভাব মুরগীর প্রজনন ক্ষমতা কমিয়ে দেয়, ডিমের খোলস পাতলা হয় এবং ডিমের উৎপাদন কমে যেতে পারে।
4. রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা হ্রাস:
ভিটামিন C এবং E-এর মতো অ্যান্টি-অক্সিডেন্টগুলোর অভাবে মুরগীর ইমিউন সিস্টেম দুর্বল হয়ে পড়ে। এতে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কমে যায়, মুরগী সহজেই বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হতে পারে।
5. স্নায়বিক সমস্যা:
ভিটামিন B1, B6 এবং B12-এর অভাব স্নায়বিক সমস্যা সৃষ্টি করতে পারে, যা মুরগীর অস্বাভাবিক চলাফেরা এবং প্যারালাইসিসের কারণ হতে পারে।
6. পালক ও ত্বকের স্বাস্থ্যহানি:
ভিটামিন B2, বায়োটিন (H), এবং B3-এর অভাবে পালক রুক্ষ, ভঙ্গুর এবং অস্বাভাবিকভাবে পড়ে যেতে পারে। ত্বকেও ফোসকা বা ক্ষত তৈরি হতে পারে।
7. স্ট্রেস ও ক্লান্তি:
ভিটামিন C-এর অভাব মুরগীকে স্ট্রেসের প্রতি সংবেদনশীল করে তোলে। বিশেষ করে পরিবেশগত চাপ বা রোগের সময় স্ট্রেসের ফলে মৃত্যুহার বেড়ে যেতে পারে।
8. হিমোগ্লোবিন ও রক্তকণিকার ঘাটতি:
ভিটামিন B6 এবং B12-এর অভাবে রক্তস্বল্পতা দেখা দেয়, যা রক্তের কার্যকারিতা এবং অক্সিজেন সরবরাহে বাধা সৃষ্টি করে।
9. ডিমের নিম্নমান:
ভিটামিনের অভাবে ডিমের মান খারাপ হতে পারে, যেমন ডিমের খোলস পাতলা হওয়া বা ডিমের আকার ছোট হওয়া। ডিমের প্রজনন হারও কমে যেতে পারে।
10. অবসাদ ও দুর্বলতা:
ভিটামিন B কমপ্লেক্সের অভাব মুরগীতে অবসাদ সৃষ্টি করে, যা তাদের সক্রিয়তা এবং খাদ্য গ্রহণের আগ্রহ কমিয়ে দেয়। এতে মুরগীর ওজন কমে যেতে পারে।
সার্বিকভাবে, মাল্টিভিটামিনের অভাবে মুরগীর সামগ্রিক স্বাস্থ্য, উৎপাদনশীলতা এবং রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে, যা পোল্ট্রি খামারিদের জন্য আর্থিক ক্ষতির কারণ হতে পারে।
মুরগীতে বিভিন্ন ভিটামিনের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রয়েছে। নিচে উল্লেখ করা হলো কোন ভিটামিন মুরগীর শরীরে কী কাজ করে:
1. ভিটামিন A (রেটিনল):
কাজ: চোখের স্বাস্থ্য রক্ষা, ত্বক ও পালকের বৃদ্ধি, প্রতিরোধ ক্ষমতা উন্নত করা।
ঘাটতির লক্ষণ: চোখের সমস্যা, ত্বকের ক্ষত, বর্ধনশীল মুরগীতে বৃদ্ধি কমে যাওয়া।
2. ভিটামিন D3 (ক্যালসিফেরল):
কাজ: ক্যালসিয়াম ও ফসফরাসের শোষণ নিয়ন্ত্রণ করা, হাড় ও ডিমের খোলস শক্তিশালী করা।
ঘাটতির লক্ষণ: রিকেটস বা হাড়ের দুর্বলতা, ডিমের খোলস পাতলা হওয়া।
3. ভিটামিন E (টোকোফেরল):
কাজ: শক্তিশালী অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট হিসেবে কাজ করা, কোষের স্বাস্থ্য রক্ষা, প্রজনন ক্ষমতা উন্নত করা।
ঘাটতির লক্ষণ: পেশি দুর্বলতা, প্রজনন সমস্যা, অ্যান্টি-অক্সিডেন্টের ঘাটতি।
4. ভিটামিন K3 (মেনাডায়ন):
কাজ: রক্ত জমাট বাঁধার প্রক্রিয়া নিয়ন্ত্রণ করা।
ঘাটতির লক্ষণ: রক্তক্ষরণ সহজে হওয়া, ক্ষত সারতে দীর্ঘ সময় লাগা।
5. ভিটামিন B1 (থায়ামিন):
কাজ: শক্তি উৎপাদনে ভূমিকা পালন করা, স্নায়বিক কার্যকলাপ সঠিক রাখা।
ঘাটতির লক্ষণ: স্নায়বিক সমস্যা, অস্বাভাবিক চলাচল, খাবার গ্রহণে অনীহা।
6. ভিটামিন B2 (রিবোফ্লাভিন):
কাজ: কোষে শক্তি উৎপাদন, পালকের স্বাস্থ্য ও বৃদ্ধিতে সহায়তা।
ঘাটতির লক্ষণ: পালকের অস্বাভাবিক বৃদ্ধি, হাঁটাচলায় সমস্যা, পাখার নিচে লালচে দাগ।
7. ভিটামিন B6 (পাইরিডোক্সিন):
কাজ: প্রোটিন ও অ্যামিনো অ্যাসিডের বিপাক নিয়ন্ত্রণ করা, রক্তের হিমোগ্লোবিন তৈরি করা।
ঘাটতির লক্ষণ: বৃদ্ধির হার কমে যাওয়া, রক্তস্বল্পতা, নার্ভাস সিস্টেমের অস্বাভাবিকতা।
8. ভিটামিন B9 (ফোলিক অ্যাসিড):
কাজ: কোষের বৃদ্ধিতে সহায়তা করা, ডিএনএ সংশ্লেষণে সহায়তা।
ঘাটতির লক্ষণ: ডিমের উৎপাদনে সমস্যা, বাচ্চার বৃদ্ধি বন্ধ হওয়া।
9. ভিটামিন B12 (কোবালামিন):
কাজ: রক্তকণিকা তৈরি, স্নায়বিক কার্যকলাপ ও প্রজননে সহায়তা।
ঘাটতির লক্ষণ: রক্তস্বল্পতা, বৃদ্ধি কমে যাওয়া, ডিমের উৎপাদনে সমস্যা।
10. ভিটামিন C (অ্যাসকরবিক অ্যাসিড):
কাজ: স্ট্রেস কমানো, ইমিউন সিস্টেম শক্তিশালী করা, অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট হিসেবে কাজ করা।
ঘাটতির লক্ষণ: স্ট্রেস সহ্য করার ক্ষমতা কমে যাওয়া, ইমিউন সিস্টেম দুর্বল হওয়া।
11. ভিটামিন H (বায়োটিন):
কাজ: চর্বি ও প্রোটিন বিপাক নিয়ন্ত্রণ, পালকের স্বাস্থ্য উন্নত করা।
ঘাটতির লক্ষণ: ত্বকে ক্ষত, পালক রুক্ষ ও ভঙ্গুর হওয়া।
সার্বিকভাবে, প্রতিটি ভিটামিন মুরগীর শরীরের নির্দিষ্ট কাজের জন্য অপরিহার্য, যেমন বৃদ্ধি, প্রজনন, রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা, এবং শক্তি উৎপাদনে ভূমিকা পালন করে।
মেগাভিট W.S. সম্পর্কে কিছু অজানা তথ্য:
প্রতিটি কেজিতে যা থাকে:
ভিটামিন এ: 120,000,000 IU
ভিটামিন ডি3: 26,500,000 IU
ভিটামিন ই: 22.00 গ্রাম
ভিটামিন কে3 (মেনাডায়ন): 17.50 গ্রাম
ভিটামিন বি1 (থিয়ামিন HCl): 12.50 গ্রাম
ভিটামিন বি2 (রিবোফ্লাভিন): 35.00 গ্রাম
ভিটামিন বি6 (পাইরিডোক্সিন HCl): 12.50 গ্রাম
ভিটামিন বি12 (কোবালামিন): 25.00 মিলিগ্রাম
ভিটামিন বি3 (নায়াসিনামাইড): 22.00 গ্রাম
ভিটামিন বি5 (প্যান্টোথেনিক অ্যাসিড): 18.50 গ্রাম
ভিটামিন বি9 (ফোলিক অ্যাসিড): 1.20 গ্রাম
ভিটামিন এইচ (বায়োটিন): 400.00 মাইক্রোগ্রাম
ভিটামিন সি (অ্যাসকরবিক অ্যাসিড): 320.00 গ্রাম
এল-লাইসিন HCl: 60.00 গ্রাম
ডিএল-মেথিওনিন: 60.00 গ্রাম
ল্যাকটোজ এবং ডেক্সট্রোজ: 1,000.00 গ্রাম পর্যন্ত
ব্যবহার:
মেগাভিট W.S. পাউডার একটি বিশেষভাবে প্রস্তুতকৃত ভিটামিন এবং অ্যামিনো অ্যাসিডের মিশ্রণ যা পোল্ট্রির জন্য খাদ্য দক্ষতা, পালক বৃদ্ধি, পেশি বিকাশ, ডিমের উৎপাদন ও বাচ্চা ফোটাতে সহায়ক। এটি মুরগীর রোগ প্রতিরোধ ও সুস্থ হতে সহায়ক ভূমিকা পালন করে। বিশেষ করে এল-লাইসিন ও ডিএল-মেথিওনিন মিশ্রণের মাধ্যমে পেশির বৃদ্ধি ও প্রাণীর সার্বিক বিকাশে সহায়তা করে।
সেবন পদ্ধতি:
৫-১০ লিটার পানির জন্য ১ গ্রাম মেগাভিট W.S. পাউডার ব্যবহার করতে হবে। প্রয়োজন অনুযায়ী ডোজ বাড়ানো যেতে পারে। মেশানো খাবারের জন্য, ১০০-২০০ গ্রাম প্রতি মেট্রিক টন খাদ্যে ব্যবহার করতে হবে।
সংরক্ষণ:
শীতল ও শুষ্ক স্থানে সংরক্ষণ করুন। সব সময় সিল করা প্যাকেটে রাখুন।
উৎপত্তি: সিঙ্গাপুর
উৎপাদনকারী: Vetpharm Lab (S) Pte Ltd, সিঙ্গাপুর
Megavit WS সম্পর্কে আরো জানতে
Dr. Pobitro Mohonto
Territory Manager
Yelanc Pharma
01713241693
Tangail