08/10/2023
# #কেঁচোর_বিষ্ঠায়_কি_আছে?
মাটিতে যত প্রকার Ingredients আছে, তাঁর সবগুলোই রয়েছে কেঁচোর বিষ্ঠাতে, স্থানীয় কেঁচোর বিষ্ঠা পরীক্ষা নিরীক্ষা করে দেখা গেছে বন-জঙ্গলের এক মুঠো মাটিতে যত টুকু ক্যালসিয়াম থাকে তাঁর চাইতে 6 গুন বেশী ক্যালসিয়াম পাওয়া গেছে কেঁচোর বিষ্ঠায় l
নাইট্রোজেন পাওয়া গেছে 7 গুন বেশী
ম্যাগনেশিয়াম পাওয়া গেছে 8 গুন বেশী
ফসফেট পাওয়া গেছে 9 গুন বেশী
সালফার পাওয়া গেছে 10 গুন বেশী
পটাশ পাওয়া গেছে 11 গুন বেশী
এমনই ভাবে অন্যান্য পুষ্টিও বহু গুনে রয়েছে কেঁচোর বিষ্ঠায় l জীব আমরুত অথবা গোবর সার দিয়ে মালচিং করে রাখলে অটোমেটিক্যালি টবের মাটিতে Local কেঁচো জন্ম নিবে l
পৃথিবীতে যদি কেঁচো না থাকতো তাহলে গহীন অরণ্যের সৃষ্টি হতো না l আমাদের রাসায়নিক সার, জৈবিক সার এবং কম্পোস্ট সারের কোন প্রয়োজন হবেনা যদি স্থানীয় কেঁচোর বংশ বিস্তার করা যায় l শুধু তাই নয়, এদেশের কৃষক যদি কেঁচোর বংশ বিস্তার ঘটাতে পারে তাহলে ভূ-গর্ভস্থ পানি একেবারে উপরে চলে আসবে l মাটির ক্ষয়রোধ হবে, অকাল বন্যা হবেনা ইত্যাদি।
কেঁচো মাটির ভিতরে ১৫ ফুট পর্যন্ত যাতায়াত করে। কেঁচো অসংখ্য যাতায়াত পথ তৈরি করে, প্রাকৃতিক কৃষির পূষ্টিদাতা-হাজার হাজার, লাখ লাখ কেঁচোর যাতায়াত পথ দিয়ে পানি সহজেই ভূগর্ভস্থ হয়ে যায়। অথচ রাসায়নিক কৃষি পানি ভূগর্ভস্থ হতে বাধা দেয়। এভাবে বন্যা নিয়ন্ত্রণ করা সহজতর হয়, আবার শুষ্ক মৌসুমে কেঁচোর যাতায়াত পথ দিয়ে পানি উপরে উঠে আসে এবং মালচিং থাকার দরুন পানি উদ্বায়ী না হয়ে গাছের চাহিদা পূরণ করে। মালচিং ও জীবামরুতের মাধ্যমে আমরা কেঁচোর কলোনী তৈরি করতে পারি, যার মাধ্যমে বন্যা প্রতিরোধসহ পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষা করা অনেক সহজতর।
আবার পাশাপাশি মনে রাখবেন যে, ভার্মিকম্পোস্টের কেঁচোর সার মানব জাতির জন্য অভিশাপ। এটা মূলতঃ কেঁচোর মত মনে হলেও কেঁচোর মূল বৈশিষ্ট্যের সাথে মিলে না। Eisenia fetida মাটির ভিতরে এরা বসবাস করে না, এরা ওপরের অর্গানিক জিনিসপত্র খায়। ল্যাবটেষ্টে এদের মলে ক্ষতিকর ভারী ধাতু পাওয়া যায় এবং উৎপাদিত শাকসবজি ও ফলমূলে চলে আসে,যা মানব দেহের জন্য অত্যন্ত ক্ষতিকর। যেমনঃ ক্রমিয়াম, লীড ইত্যাদি। এরা ক্যান্সারের মত ব্যাধি তৈরি করে। বন্যা প্রতিরোধে এদের ভূমিকার কোন প্রশ্নই ওঠে না। এদের প্লাষ্টিকের পাত্রে রেখে অর্গানিক আবর্জনা খাইয়ে ভার্মিকম্পোস্ট তৈরি করা হয় মাত্র। দেশী কেঁচো দিয়ে ভার্মিকম্পোস্ট করা যায় না এবং দরকারও হয় না। পরিবেশ দিলে আপনার জমিতে তথা গাছের গোঁড়ায় দেশী কেঁচো সব নিউট্রিয়েন্ট পৌঁছে দিবে।
# # "ছাদকৃষি" এর মাটির টবে,হাফ ড্রামের কেঁচো থেকে কোন উপকার এর আশা করা যায় কি?
সীমিত মাটিতে কেঁচোতো উপকারের পরিবর্তে ক্ষতি করতে পারে। টবের সীমিত মাটিতে কেঁচো রাখাকী ঠিক হবে?
জি হ্যা উপকৃত হবেন, যেহেতু ড্রামের নিচে কেঁচো যেতে পারেনা সেহেতু ঐটুকু মাটিতেই ঘুরে ফিরে মাটি খেয়ে সে বিষ্ঠা ত্যাগ করবে l
কেঁচো থাকলে বড় বড় সার কোম্পানী বন্ধ হয়ে যাবে, তাই সহজ সরল কৃষকদেরকে ভয় দিখিয়ে তারা হয় l
# # বিদেশি যে কেঁচো দিয়ে ভার্মি কম্পোস্ট করা হয় সেগুলো কেমন?
ভার্মিকম্পোস্ট তৈরীতে সরকারি উদ্যোগে যেসব বিদেশী 'কেঁচো' সাপ্লাই দেওয়া হয়ে থাকে, সেটা একপ্রকার বাণিজ্যিক ষড়যন্ত্র বললে ভুল হবে না। কারণ, ওগুলো earth worm নয়। অন্য প্রাণী বলা যায়। এটা অনেকে জানেনই না, জানানোর চেষ্টাও হয়নি। আমাদের দেশীয় সাধারণ কেঁচোর তুলনা হয় না।
কেঁচোর মতো দেখতে হলেও ওগুলো কেঁচো নয়, Eisenia Foetida নামক একটি রাক্ষসী প্রাণী।বিদেশী কেঁচো দ্বারা যে ভার্মি কম্পোস্ট বানানো হয় তা থেকে অধিক পরিমানে হেভী মেটাল জাতীয় পয়জন অর্থাৎ বিষ আমাদের প্রতিদিনের খাদ্যের সাথে যোগ হচ্ছে l ভার্মি কম্পোস্ট নিয়ে অর্গানিক কৃষি বিজ্ঞানীরা বিশ্বব্যাপী তোলপাড় করলেও আমরা এর বিরোধী l ভার্মি কম্পোস্ট মাটির উর্বরতা বাধাগ্রস্ত করে এবং উল্লেখিত হেভী মেটাল গুলো খাদের সাথে যোগ করে বিধায় বিগত ত্রিশ বছর যাবৎ আমাদের প্রতিদিনের খাদ্যের সাথে এগুলো পাওয়া যায়। একটি বিশেষ সংস্থা এই ইংরেজী কেঁচো দ্বারা বার্ষিক ট্রিলিয়ন ডলার আয় করে এবং তা থেকে বিভিন্ন NGO র মাধ্যমে মাঠকর্মীদের পিছনে বিলিয়ন ডলার ব্যায় করে l এসব মাঠকর্মী অন্ধ ও বধির।
# # ভার্মি কম্পোস্ট কি কেঁচোর বিষ্ঠা নয়?
কেঁচোকে ইংরেজীতে বলে Earthworm আর ভার্মিকম্পোস্ট যেটা ব্যবহৃত হয় তাঁকে বলে Eisenia Foetida. কেঁচোর মতো দেখতে হলেও এটা কেঁচো নয় l এগুলো মাটি ভেদ করেনা এবং মাটি খায় না, এরা মাটিতে থাকা হেভী মেটাল খায়।
# # কেঁচো সার তৈরি করতে যদি দেশী কেঁচো ব্যাবহার করা হয়?
দেশী কেঁচো যতক্ষণ পর্যন্ত 15 ফুট মাটির নিচে গিয়ে আবার বের হয়ে আসবে ততক্ষণ বিষ্ঠা ত্যাগ করবে না অর্থাৎ কেঁচো সার পাবেন না l দেশী কেঁচো ভার্মি কম্পোস্টের খাঁচায় বন্দী থাকবে না l
# # দেশি কেঁচো কি একাধিক ধরনের হয়ে থাকে?( আমাদের এখানে বহু আগে থেকেই মোটা ও চিকন দুই ধরনের কেঁচো দেখে থাকি)
জি হ্যা, কৃষি এবং জলবায়ু সংক্রান্ত বিষয়ে দেশী বলতে আমরা ভারত উপমহাদেশ কে বুঝিয়ে থাকি। স্থানীয় কেঁচো বহু ধরণের হয়ে থাকে, এর মধ্যে চারটি প্রজাতী কৃষি ক্ষেত্রে প্রচুর ভূমিকা রাখে, যেমনঃ
1) Lampito -প্রজাতির কেঁচো এক বছরে এক হেক্টর জমিতে 359. 36 মেট্রিক টন বিষ্ঠা ত্যাগ করে l
2) Feretima ilangata - প্রজাতির কেঁচো এক বছরে এক হেক্টর জমিতে 538. 24 মেট্রিক টন বিষ্ঠা ত্যাগ করে l
3) Pontoclolanis korethraram - প্রজাতির কেঁচো এক বছরে এক হেক্টর জমিতে 93.26 মেট্রিক টন বিষ্ঠা ত্যাগ করে l
Poreonics exavets - প্রজাতির কেঁচো এক বছরে এক হেক্টর জমিতে 127.32 মেট্রিক টন বিষ্ঠা ত্যাগ করে l
গ্রন্থনায় : রহমত শহীদুল ইসলাম
collected