10/01/2022
আসসালামু আলাইকুম সবাইকে।
আজকে আমরা আমাদের সবার প্রিয় ককাটেল পাখি নিয়ে অল্প পরিসরে কিছু জানার চেষ্টা করব।
ককাটেল পাখির জীবনকাল, বাসস্থান ও খাদ্যাভ্যাসঃ
জীবনকালঃ
খাঁচাবন্দি ককাটিয়েল সাধারণত ১৬ থেকে ২৫ বছর বাঁচে । রেকর্ড অনুযায়ী কিছু কিছু ক্ষেত্রে ককাটিয়েল ১০ থেকে ১৫ বাঁচে; ককাটিয়েলের ৩২ বছর বেঁচে থাকারও রেকর্ড আছে । একটি ককাটিয়েল পাখি অবশ্য ৩৬ বছর বেঁচে ছিল । এগুলো সাধারণত নির্ভর করে খাবার, পরিবেশ আর ওড়ার জায়গার উপর ।
বাসস্থান ও বিস্তরণঃ
ককাটিয়েল অস্ট্রেলিয়ার স্থানীয় পাখি । যেসব অঞ্চলে মরু, বিস্তৃত অনুর্বর ভূমি বা কিছুটা শুস্ক বিস্তীর্ণ ভূমি আছে, সেসব অঞ্চলে এদের বেশি দেখা গেলেও সবসময় পানির কাছাকাছি থাকে । এরা যাযাবর শ্রেণীর পাখি । যেখানে খাবার আর পানির প্রাচুর্য, সেখানে এরা উড়ে যেতে সময় নেয় না । প্রকৃতিতে ককাটিয়েলকে সাধারণত জোড়া বা ছোট ঝাঁক হিসেবে পাওয়া যায় । অনেক সময় অনেকগুলো ককাটিয়েলকে একসাথে ঝাঁক বেঁধে পানি খেতে দেখা যায় । অনেক কৃষকের কাছে এরা মূর্তিমান আতঙ্ক । এরা প্রায়ই ক্ষেতে হামলা করে চাষ করা ফসল খেয়ে আসে । অস্ট্রেলিয়ার অতি উর্বর দক্ষিণ-পশ্চিম ও দক্ষিণ-পূর্ব দিকে, সুবিশাল ওয়েস্টার্ন অস্ট্রেলিয়ান মরুভূমিতে এবং কেপ ইয়র্ক পেনিনসুলা উপদ্বীপে এরা অনুপস্থিত । ককাটিয়েল একমাত্র কাকাতুয়া প্রজাতি যারা কিছু কিছু ক্ষেত্রে জন্মের প্রথম বছরের শেষের দিকেই বাচ্চা দেয়া শুরু করে দেয় ।
খাবারঃ
আমাদের দেশের ককাটেল পাখি পালনকারীরা পাখিকে সাধারণত বিভিন্ন ধরনের বিজ শশ্য, বিভিন্ন ধরণের ফলমূল, শাক-সবজি, সফট-ফুড, এগ-ফুড এই সব প্রদান করে থাকেন।
যেমন: বীজের মধ্যে ক্যানারী, চিনা, কাউন, ধান, মিলেট (সাদা, হলুদ, লাল, কালো), সূর্যমূখীর বীজ, বাজরা, তিশি, গুজিতিল, হ্যাম্প সীড, সরিষা ইত্যাদি।
ফল-মূলের মধ্যে: ককাটেল মূলত সব ধরনের ফল-মূলই খেয়ে থাকে যেমন- আপেল, কলা, তরমুজ, কমলা, পেপে, নাশপাতি, পেয়ারা, আম, চেরি ফল, আঙুর ইত্যাদি সব ই এর খেয়ে থাকে।
শাক-সবজি: শাক-সবজিও এর প্রায় সবই খেয়ে থাকে যেমন- লাল শাক, পালং শাক, মুলা শাক, কলমি শাক, ধনে পাতা, সাজনা পাতা, নিম পাতা, সিম, গাজর, ব্রোকলি, ফুল কপি, বাধা কপি, মটর, বরবটি, শশা, মিষ্টি কুমড়া, মরিচ ইত্যাদি সব ই এরা খেয়ে থাকে।
তবে খাচায় আমরা যারা ককাটেল পালন করি আমাদের দেশে সব পাখির খাদ্যাভ্যাস এক রকম নয়। সব পাখি সব ধরনের সবজি, ফল, সিড খায় না অভ্যাসের কারনে। তবে সহজেই এদের খাদ্যাভ্যাস পরিবর্তন করে সব ধরনের খাবারে অভ্যস্ত করা যায়।
সফট-ফুডঃ পাখির শারিরিক বিকাশ ও পুষ্টির একটা বড় অভাব এই সফট ফুড থেকে পুরণ হয়। সফট ফুড বানানোটাও খুব সহজ একটা ব্যাপার। যেমন: বিভিন্ন ধরনের ডাল মিলয়ে নিয়ে এর মধ্যে বুটের ডাল, ক্যাংকার, মুশুর ডাল, মুগ ডাল, ছোলা, ভুট্টা ভাংগা, গম ইত্যাদি আগের দিন রাতে ভিজিয়ে রেখে সকালে সিদ্ধ করে পাখিকে দেওয়া হয়। সাথে ইচ্ছে করলে পরিমাণমত সজনে পাতার গুড়ো, অল্প নিম পাতার গুড়ো বা সরাসরি পাতাও ব্যাবহার করা যাবে, সাথে কিচু সবজি ও দেওয়া যেতে পারে। তবে নিম পাতা অভিজ্ঞ ব্রিডার রা মাসে ৪ দিন এর বেশি দিতে সচরাচর নিষেধ করেন কারন অধিক নিমপাতা পাখির প্রজনন ক্ষমতা হ্রাস করে ফেলে।
ধন্যবাদ
Rumaisa Aviary