09/12/2022
ইসলামের দৃষ্টিতে পবিত্র জুমা ও জুমাবারের রাত-দিন অপরিসীম গুরুত্বপূর্ণ। জুমার দিনকে সাপ্তাহিক ঈদের দিন বলা হয়েছে। জুমার দিনের সওয়াব ও মর্যাদা ঈদুল ফিতর ও ঈদুল আজহার মতোই। রাসুল (সা.) একটি হাদিসে বলেছেন, “মুমিনের জন্য জুমার দিন হলো সাপ্তাহিক ঈদের দিন।” (ইবনে মাজাহ, হাদিস নম্বর ১০৯৮)।
জুমার গুরুত্ব আল্লাহ তায়ালার কাছে এত বেশি যে, কুরআনে ‘জুমা’ নামে একটি স্বতন্ত্র সূরা নাজিল করেছেন। আল্লাহ তায়লা কুরআনে ইরশাদ করেন,
“হে মুমিনগণ! জুমার দিন যখন নামাজের আহ্বান জানানো হয়, তখন তোমরা আল্লাহর স্মরণে (মসজিদে) এগিয়ে যাও এবং বেচা-কেনা (দুনিয়াবি যাবতীয় কাজকর্ম ছেড়ে দাও। এটা তোমাদের জন্য কল্যাণকর; যদি তোমরা জানতে।” (সূরা জুমা- ০৯)।
❇️ জুম্মারদিনের ফজিলত অনেক আর এইদিনে করা আমলের ফজিলত ও অনেক। আসুন জেনে নেই জুম্মাবারে কি কি আমল করা উচিত-
🟦 গোসল করে পরিষ্কার পোশাক পরা।
🟦 সুগন্ধি লাগানো।
🟦 জুম্মার সালাত জামাতের সাথে আদায় করা।
🟦বেশি বেশি দুরূদ পাঠ।
🟦 সুরা কাহফ পাঠ করা।
🟦 দুয়া কবুলের সময় বেশি বেশি দুয়া করা। [ আসর থেকে মাগরিবের ওয়াক্ত শুরুর আগপর্যন্ত ]
এই আমলগুলোর ভেতর যেকোনো একটি আমল সম্পর্কে আমরা জানবো, ইনশাআল্ললহ।
❇️ জুমার দিনের বিশেষ আমলঃ
প্রিয় নবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের প্রতি দরূদ পড়া ফজিলতপূর্ণ ইবাদত ও সাওয়াবের কাজ। তিনি নিজেই হাদিসের একাধিক বর্ণনায় তা তুলে ধরেছেন-
❇️ হজরত আওস ইবনে আওস রাদিয়াল্লাহু আনহু বর্ণনা করেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, ‘তোমাদের দিনগুলোর মধ্যে সর্বোত্তম দিন হচ্ছে জুমুআর দিন। সুতরাং ঐ দিন তোমরা আমার উপর বেশি বেশি দরূদ পড়। কেননা তোমাদের দরূদ আমার কাছে পেশ করা হয়।’
লোকেরা (উপস্থিত সাহাবারা) বললেন, ‘ইয়া রাসুলুল্লাহ! আপনি তো (মারা যাওয়ার পর) পচে-গলে নিশ্চিহ্ন হয়ে যাবেন। সে ক্ষেত্রে আমাদের দরূদ কিভাবে আপনার কাছে পেশ করা হবে?
তিনি বললেন, ‘আল্লাহ তাআলা পয়গম্বরদের দেহসমূহকে খেয়ে ফেলা মাটির উপর হারাম করে দিয়েছেন।’ (বিধায় তাঁদের শরীর আবহমান কাল ধরে অক্ষত থাকবে।) (আবু দাউদ, নাসাঈ, ইবনে মাজাহ, মুসনাদে আহমাদ, দারেমি)
❇️ হজরত ইবনে মাসউদ রাদিয়াল্লাহু আনহু বর্ণনা করেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, ‘কেয়ামতের দিন সেই ব্যক্তি সব লোকের চেয়ে আমার বেশি কাছাকাছি হবে; যে তাদের মধ্যে সবচেয়ে বেশি আমার উপর দরূদ পড়বে।’ (তিরমিজি)
❇️ হজরত আব্দুল্লাহ ইবনে আমর রাদিয়াল্লাহু আনহুমা বর্ণনা করেন, তিনি রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে বলতে শুনেছেন, ‘যে ব্যক্তি আমার প্রতি একবার দরূদ পাঠ করবে, আল্লাহ (এ দরূদ পড়ার বকরতে) তার উপর দশবার দরূদ পাঠ (রহমত নাজিল) করবেন।’ (মুসলিম, তিরমিজি, নাসাঈ, আবু দাউদ, মুসনাদে আহমাদ)
সুতরাং মুমিন মুসলমানের উচিত, সপ্তাহের সেরা দিন জুমায় দরূদের সেরা আমল করার প্রতি মনোযোগী হওয়া। কোরআন-সুন্নাহর নির্দেশনায় আমল করা। রহমত বরকত ও ক্ষমার দিকে ধাবিত হওয়া।