আম গাছের তলায় ফুঁপিয়ে ফুঁপিয়ে কাঁদছে ছোট্ট আর্চি। পাশ দিয়ে যাওয়ার সময় সেটা নজরে পড়ে মোহরের। আর্চি তার থেকে অনেক ছোট, তাই ভাইয়ের মতোই ভালবাসে মোহর তাকে। তাকে কাঁদতে দেখে মোহর জিজ্ঞেস করে,
-কি রে আর্চি, কি হয়েছে?
কিছুক্ষণ চুপ করে থেকে আর্চি বলে,
-চকলেট দাদা বলল আজ পার্টি হবে না।
মোহর জিজ্ঞেস করল,
-কেন হবে না?
-বলল, কাকুরা বাড়ি চলে গেছে, তার মধ্যে বৃষ্টি, তার ওপর মায়ের শরীর খারাপ। পার্টি হবে না। এই বলে এক পেটি ডিম নিয়ে চলে গেল।
মোহর বলে,
-আর্চি তুই এতো বোকা কেন? ভুলে যাস না আমাদের একটা মা আছে। আর আমাদের মা কোন অবস্থাতেই হারে না।
আর্চি বলল,
-চকলেট যে বলল মায়ের শরীর খারাপ!
-মা ঠিক হয়ে যাবে। আমরা সবাই মাকে কত ভালবাসি। আর আমাদের ভালবাসার কত স্ট্রং জানিস তো? নে, চোখ মোছ। ওই দেখ সাদাকাকু ঢুকছে ডিম নিয়ে। আর ওই তো মা উঠে পড়েছে। দেখলি তো? মিলল আমার কথা? চল এবার চোখ মোছ, চকলেটকে গিয়ে
আমার মাথায় হঠাৎ হঠাৎ এক একটা খেয়াল চাপে, আর যতক্ষণ না তাকে বাস্তব রূপ দিতে পারছি ততক্ষণ শান্তি নেই। যাকে বলে উঠল বাই তো কটক যাই। কাল ওটি শেষ হতে হতে বেশ রাত হয়ে যায়। সব কাজ সেরে যখন বিছানায় এসে বসি তখন ঘড়ির কাঁটা বারোটা ছুঁই ছুঁই। হঠাৎ মনে হল, 'এই যে পঞ্চাশ বাহান্নটা বাচ্চা রাস্তা থেকে এসেছে, অপরেশন হতে, এরা তো দু-চারদিন পর আবার রাস্তায় ফিরে যাবে। বেচারারা রাস্তায় গিয়ে কিই বা পাবে! তাই শেল্টারে যে ক'দিন আছে সে কদিন একটু ভালমন্দ খেয়ে যাক। '
সেই হিসাবে দেখতে গেলে কাল শেল্টারে কোন স্পেশাল মিল স্পনসর অথবা পার্টি তো নেই। তাহলে কি হবে! হঠাৎ মনে পড়ল সুমনার কথা আর কাল তো মাসের পয়লা। আরে সুমনা তো বলেই রেখেছে যে ফি মাসের পয়লা তে বাচ্চাদের জন্য পার্টি মাস্ট। গত মাসে ব্যাক টু ব্যাক পার্টির চাপে আর পয়লা উদযাপন করা হয় নি। এমাসের জন্যও সুমনা দুদিন আগে মনে করিয়েছিল।ব্যাস,প্রায়
সাত সকালে থুড়থুড়ি দেখি উঠোনের মাঝে পা ছড়িয়ে, কপাল চাপড়ে কাঁদতে বসেছে। তাকে ঘিরে রাণি, টেরি, লেংড়ি সবাই মিলে স্বান্তনা দিচ্ছে।আর সে জোরে জোরে বলে চলেছে,
-এমন দিনও দেখতে হবে ভাবি নি। জোয়ান ছেলে সে নাকি কৌপিন পরে, মাথা মুড়িয়ে হাতে ভিক্ষের ঝুলি নিয়ে ঘর ছেড়ে যাচ্ছে বেবাগি হতে। আর তার মা কে দেখ, পড়ে পড়ে ঘুমচ্ছে।
কথাটা কানে যেতে ব্রাউনিকে জিজ্ঞেস করলাম,
কি হয়েছে রে ব্রাউনি? সাতসকালে কাকে উদ্ধার করছে?
ব্রাউনি বলল,
বোঝনি! তোমাকেই বলছে।
-আমাকে? কেন? আমি কি করলাম? আর কে ঘর ছেড়ে যাচ্ছে?
-তুমি কিছুই জানো না! চকলেট সন্ন্যাসী হবে বলে কখন থেকে প্ল্যান করেছে।
-চকলেট সন্ন্যাসী হবে? কেন?
-আজ তিনদিন হয়ে গেল শেল্টারে কোন পার্টি নেই। চকলেট বলল, "মাকে বলে দিস এ সংসারের মায়া কাটিয়ে আমি মোক্ষ লাভের পথে চললাম।"
আমি বললাম,
-তা সে কি সন্ন্যাসী হয়েই গেছে?
ক্লিও বলে উঠল,
-না মা, ওই যে আড়াই পা গিয়ে
কাল রাতে ঘুমাতে যাওয়ার আগে দেখি টিকটিকি কম্পিউটারের সামনে বসে মনযোগ সহকারে কি করছে, পাশে বসে মোহর। শেল্টারে এই দুইজন আছে, যারা পড়াশোনাকে পূজো জ্ঞান করে। তাই ভাবলাম পড়াশোনা করছে, থাক করুক। এই বলে আমি শুতে গেলাম। আমি যাওয়ার পরই ঘরে ঢুকল লালা, কালি, টেরি,রূণি,চকলেট। সবাই এসে হুমড়ি খেয়ে পড়ল কম্পিউটারের ওপর।
-আরে জিনিসটা ভেঙে দিবি নাকি? চিৎকার করে উঠল মোহর।
-হোল কানেক্ট হল? সবাই জিজ্ঞেস করে উঠল।
টিকটিকি মাথা দোলালো,
-নাহ হচ্ছে না কিছুতেই।
-কেমন ছাতার মাথা কম্পুটার পড়িস তোরা একটা ভিডিও কনফারেন্স করাতে পারছিস না! ঝাঁঝিয়ে উঠল ব্রাউনি।
-নম্বরটা লাগছে না কিছুতেই। বিপ বিপ করে কেটে যাচ্ছে দিদা।
-ঠিক করে দেখ ভুল হচ্ছে না তো?
-না এই কিছুদিন আগেই আমি এই নম্বরে কল করেছি।লুসি নিজেই বলল জন্মদিনের দিন ভিডিও কনফারেন্স করতে।
এমন সময় দরজায় টোকা, দরজা খুলে তো সবাই হতভম্ব, লুসি দা
A1 শেল্টারে আজ পথ ভুলে দুটো রঙিন প্রজাপতি ঢুকে পড়ে। একজনের নাম সুমেধা অন্যটির নাম শৌভিক। এই দুই প্রজাপতির রঙের ছটায় শেল্টারের প্রতিটি কোণা রঙিন হয়ে ওঠে। এতদিন তারা ফেসবুকে কেবল A1র বাচ্চাদের ছবি আর ভিডিও দেখত, আজ ভাবল ' চল, নাহয় নিজের চোখেই দেখে আসি।' আর নতুন অতিথি পেয়ে আমাদের চিল্লার পার্টির বিচ্চুরাও তো আনন্দে আত্মহারা। আসার কারণটা এবার বলি, আগামী ২৬শে জুন সুমেধার জন্মদিন। তাই উইক ডে তে সময় হবে না বলে আজ রবিবার ছুটির দিনে ঘুরে গেল A1 থেকে। বাচ্চাদের সাথে একটা সুন্দর সময় কাটানোর সাথে সাথে অগ্রিম অনেকদিন পর অনেকদিন পর একটা নির্ভেজাল আড্ডা দেওয়া গেল।
সুমেধাকে জন্মদিনের অগ্রিম শুভেচ্ছা। সেই সঙ্গে শৌভিক ও সুমেধাকে আগামী দিনগুলোর জন্য অনেক শুভকামনা। 💚💛
সকাল সকাল দেখি সব কোর্ট প্যাণ্ট গাউন স্কার্ট পরে সবাই উঠোন ঘুরছে রুণি বেঁটে মানুষ, নিজেকে সামলাবে না গাউন সামলাবে বুঝতে পারছে না। মাঝেমাঝেই ধুপধাপ আছাড় খাচ্ছে। মোহর একটা A লাইন ড্রেস পরেছে। বকুলাল একটা সাদা সাফারি স্যুট পরেছে। কালো ছেলে সাদা সাফারিতে বেশ মানিয়েছে। টমি রাগে গরগর করতে করতে দোতলা থেকে নেমে এল।
-চকলেট কোথায় মা?
-জানিনা হবে কোথাও। কেন কি হল?
-কি হলো? কাল আমার কোর্ট প্যাণ্ট নিয়ে গিয়েছিল ইস্ত্রি করতে। দেখ প্যাণ্টের পিছনটা এক খাবলা পুড়িয়ে এনেছে। এখন আমি কি পরব?
পাশ থেকে পণ্ডিত বলল চিন্তা -করিস না ভাই, মায়ের আলমারিতে আমার আর একখানা পাতলুন রয়েছে সেটা পরে নি গে যা।
-দাদু তোমার মাথা খারাপ, আমি ওই নুঙ্গি মার্কা পাতলুন পরে পার্টিতে যাব?
আমি বলি,
-কার পার্টিতে যাবি তোরা?
মৌরি তার ফ্লোরাল স্কার্ট দুলিয়ে বলে,
-লুসির বার্থডে পার্টি মা। আর আজকের ড্রেস কোড ওয়ে
আমার ব্যক্তিগত জীবনে আমি ডাক্তারদের থেকে শতহস্ত দূরে থাকি। কারণ? কারণটা হল, আমার যেকোন অসুখ বিসুখ ব্যথা বেদনা যাই নিয়ে তাদের কাছে যাই না কেন তারা 'সব সমস্যার একটাই সমাধান" র মত আমার সব অসুখের একটাই কারণের মত সবসময় আমার এই কুকুর বেড়াল প্রীতিকেই আসামীর কাঠগড়ায় খাড়া করে থাকেন। তাই অসুখ বিসুখ যাই হোকনা কেন, এ সেই, " মনের বেদনা রাখো মা মনের " যন্ত্রণা কষ্ট নিজের মধ্যেই জমিয়ে রাখি। কি আর করব??
যাইহোক, সেদিন হঠাৎ করে হোয়াটসঅ্যাপে যখন একটা মেসেজ ঢুকল, শেল্টারের বাচ্চাদের একদিন পার্টি দিতে চাই। বেশ হোক পার্টি। তা যেই নম্বরটা সেভ করতে গিয়েছি, দেখি নামের আগে " ডাক্তার " এই মেরেছে, এ আবার কেমন ডাক্তার যে কিনা ছেলের জন্মদিনে কুকুর বেড়াল খাওয়াতে চায়!
আসলে কোথাও কোথাও আমাদের ধারণায় কিছু ভুল থেকে যায়। হাতের পাওওচ আঙুল যেমন সমান হয় না তেমনি সব ডাক্তারের মানসিকতাও সমান হয় না। ক
আচ্ছা শুনলাম নাকি, A1 র বিচ্চু বাচ্চাদের দুষ্টুমি মাখা মুখগুলো একবার দেখলে নাকি হারিয়ে যাওয়া সব কিছু আবার ফিরে আসে! তাই বুঝি সুদূর কানাডায় বসে দীপশিখা মেসেজ করেছিল, দিদি ফাদার'স ডে উপলক্ষে বাচ্চাদের পার্টি দিতে চাই। আসলে মেসেজটা করেছিল দীপশিখা কিন্তু আসলে খাওনোর পরিকল্পনাটা ওর বর বিতানের।
ভয়াবহ কোভিড যখন দুনিয়া তোলপাড় করছে, কত প্রিয়জনকে ছিনিয়ে নিচ্ছে তখনই একদিন বিতানের বাবা সবাইকে ছেড়ে অনেক দূরে চলে যান। কিন্তু বাবারা কি করে দূরে যেতে পারে? তাই আবার হয় নাকি। বাবার সাথে তো সন্তানের আত্মার সম্পর্ক। সেই সম্পর্ক এতটাই মজবুত যে প্রতি পলে বাবার উপস্তিতি অনুভূত হয়। আর আজ তো ফাদার্স ডে। আজকের দিন তাকে বিশেষভাবে পাশে পাওয়ার দিন। সেই বাবার স্মরণেই আজ A1 র বাচ্চাদের পার্টি দিয়েছিল বিতান। মাংস ভাত তো ছিলই সেই সাথে গল্প শেষের বিশেষ আকর্ষণ ছিল দই মিষ্টি।
আর আজ শুধ
-কোন গণ্ডগ্রামে থাকিস ভাই, কত খুঁজে একটা দোকানেও আইসক্রিম পেলাম না।
ধুতির খুঁটে ঘাম মুছতে মুছতে বলে ফন্টে।
স্নোয়ি বলে,
-কি করব বল। এটা তো গ্রাম। অর্ধেক সময় তো কারেণ্ট থাকে না। তো ফ্রিজ না চললে আইসক্রিমটা কি আর আইসক্রিম থাকে? গলে ক্ষীর হয়ে যাবে। তাই আর দোকানদাররা রাখে না।
কাজ থেকে বাড়ি ফিরেছে বার্ণ, ঘরে ঢুকে চমকে ওঠে ফন্টেকে দেখে,
-আরে ফন্টে যে, কখন এলি? কত বড় হয়ে গেছিস, চেনা যায় না।
ফণ্টে খাট থেকে নেমে ঘট করে এক পেন্নাম ঠুকে বলে,
-এই তো এলাম বার্ণ মামা, তুমি কেমন আছো?
-যা গরম পড়েছে, এই গরমে কেমন আর থাকি। তা ডিম্পি ফন্টেকে কিছু খেতে দিলি?
ডিম্পি বলে,
-আজ ফন্টের জন্মদিন, তাই মহাভোজের আয়োজন হয়েছে আজ। ফণ্টেও আমাদের সাথে খাবে।
কথা বলতে বলতে থুড়থুড়ি ঘরে হাজির,থুড়থুড়িকে দেখে ফণ্টে জড়িয়ে ধরে বলে,
-দিদুন কেমন আছো?
থুড়থুড়ি ছলছল চোখে বলে,
-এতো দিনে বুড়িটার কথা মনে পড়ল দাদুভাই? ন
-মা, ওঠো। কি হচ্ছে দেখো বাইরে। সব্বোনাশের মাথায় বাড়ি। এবার তো চোখটা খোল, না হলে সব রসাতলে যাবে।
ক্রাঞ্চির আর্ত চিৎকারে ঘুম থেকে ধড়ফড় করে উঠে বসেছি।
-ক্কি- কি? কি হয়েছে?
-কান পেতে শোনো বুঝতে পারবে। কখন থেকে ডাকছি তোমায়।
ঘুমের চটকাটা ভাঙতেই বুঝলাম বাইরে হুলুস্থুল চলছে। বিকট আওয়াজ, ডিজে বাজছে, সেই সাথে তেমনি হাসি আর চিৎকার। মধ্যে মধ্যে কে যেন সিটি দিচ্ছে।
কি ব্যপার! আলো জ্বালিয়ে দেখি ঘর ফাঁকা! শুধু বিট্টু অঘোরে ঘুমাচ্ছে, আর ক্রাঞ্চি মাথায় হাত দিয়ে বসে আছে।
-কি ব্যপার? বাকি সব কোথায় গেল?
-তখন থেকে কি বলছি তোমায়? তুমি ঘুমিয়ে পড়তেই চকলেট তোমার ফোন নিয়ে কাকে ফোন করল। বলল চলে আয় সব রেডি। পুল পার্টি হবে।
সবাই পা টিপেটিপে চলে গেল, আমাকেও বলেছিল আমি যাইনি তোমাকে ছেড়ে।
-পুল পার্টি! দেখাচ্ছি। যেতে দে আমায়।
দরজা খুলতে গিয়ে দেখি দরজা বাইরে থেকে লক।
রাগে আমি দাঁত কিড়মিড় করছি।
A1 এর জামাইষষ্ঠী উদযাপন-
ছোটবেলায় দাদুর মুখে এক গল্প শুনেছিলাম,
🍀হরি বিনা হরির্যাতি মাংসেন মাধব, মৎস্য বিনা মধুর্যাতি মিষ্টান্ন বিনা যাদব। ব্যঞ্জন বিনা তড়িৎ যাতি ক্রোধদ্দীপ্ত অক্ষয়, লবণ বিনা শ্যাম যাতি প্রহারেণ ধনঞ্জয়🍀
এক কুলিন ব্রাহ্মণ, সংসার চলে না ঠিক মত। তার আবার দশ মেয়ের দশ জামাই। একবার ভরা বর্ষায় দশ জামাই একসাথে শ্বশুর বাড়ি এসে হাজির। শ্বশুর তো যেমন তেমন করে জামাইদের খাতির যত্ন করেই যাচ্ছে। এদিকে জামাইরাও যত্ন আত্তি পেয়ে বাড়ি যাওয়ার নামটি করে না। ব্রাহ্মণ পড়েছে মহা বিপদে। এমন সময় তার এক বন্ধু তাকে এক বুদ্ধি দিল। সে সেই কথা মতো বাড়ি ফিরে গিন্নিকে কানে কানে কিছু নির্দেশ দিল। গিন্নিও মাথা হেলাল।
দশ জামাই খেতে বসেছে। সেদিন কারো পাতে ঘি পড়ল না। হরি নামের জামাই রেগেমেগে খাওয়া ছেড়ে উঠে গেল। তল্পিতল্পা নিয়ে সোজা হাঁটা লাগাল বাড়ির উদ্দেশ্যে। পরদি
আচ্ছা তোমরা তো সবাই অনেক রকম জোড়ার কথা জানো, যেমন ধরো জোড়া শালিক, জোড়া ইলিশ, জোড়া মানিক- কিন্তু এই সবের বাইরে জোড়া পার্টির গল্প শুনেছ কি? না শুনে থাকলে আমার কাছ থেকে শোন, আর এটাও শোন এই জোড়া পার্টির আয়োজন করতে আমি আজ কতটা ল্যাজে গোবরে হয়েছি। আগেই বলি, আজ A1 এ ছিল গ্রাণ্ড পার্টি। উপলক্ষ্য দুই তনয়ার জন্মদিন। একজন হলেন পুঁচকে অহনা, আর একজন হলেন আন্তিকা। তাই দুজনের জন্মদিন উপলক্ষে A1 এ আজ জোড়া পার্টি। তো সব ঠিকঠাকই ছিল। পরিকল্পনা মত বাজার দোকান করাই ছিল। মেনুও ঠিক ঠাক। গড়বড়টা করে ফেললাম আমিই। চুয়াল্লিশ ডিগ্রি টেম্পারেচারে, চাঁদি ফাটা রোদে ঘুরে ঘুরে কার আর মাথা ঠিক থাকে? আমারও মাথা বিগড়েছে। আগের দিন বাজার থেকে কিনে আনা চিকেন ফ্রিজারে তো রেখেছি, কিন্তু ফ্রিজারটাই অন করতে ভুলে গেছি। ফল স্বরূপ যা হবার তাই হয়েছে। আমার তো মাথায় হাত। কি হবে এখন! কিন্তু মুশকিল আসান করলেন
-মা, আমাকে আজ সুন্দর করে সাজিয়ে দিবি?
সকাল সকাল চোখ খুলেই দেখি মেমু, আমাদের মেমসাহেব এক গাল হাসি মুখে দাঁড়িয়ে আছে। হাতে এক থোকা মাধবীলতা। সকালটা যে এতো সুন্দর হবে তা কল্পনাও করি নি।তাকে কোলে টেনে নিয়ে, আদর করতে করতে বললাম, -আমার ছোট্টো মেমু গালে চুমু, সাজিয়ে তো আমি দেবো, কিন্তু আজকে কি আছে, যে এতো সাজুগুজু?
মেমু বলল,
-সবার জন্মদিন হয়, আমাদের কেন হয় না? কবে জন্ম আমার? আমি এলাম কোথা থেকে?
.
.
-আজ আমার জন্মদিন করবি মা?
"মা শুনে কয় হেসে কাঁদে, খোকারে তার বুকে বেঁধে,
ইচ্ছে হয়ে ছিলি মনের মাঝারে।"
আজ থেকে বছর ছয়েক আগে ছোট্ট-খাট্টো মেমু এসেছিল আমার শেল্টারে স্টেরিলাইজেশনের জন্য। তানিয়া পাঠিয়েছিল তাকে আরো চারজন কুকুরের সাথে। চোখ কটা, সামনের দাঁত উঁচু মুখখানা যেন সবার থেকে আলাদা। স্টেরিলাইজ হয়ে ফিরে যাওয়ার বেশ কিছুদিন পর তানিয়া হঠাৎ তাকে খুঁজে পায় রাস্তার ধারে পড়ে থাকা অবস্থ
আজকের পোস্টটা একটু অন্য স্বাদের পোষ্ট। রোজ তোমাদের আমি সাজানো গোছানো শেল্টারের ছবি দেখাই। আজ দেখো এক একটা ঝড়ে শেল্টারের কি হাল হয়! যদিও বিগত চোদ্দো বছরে এতো ঝড় ঝাপটা সামলেছি, এখন সব কিছুই গা-সয়া হয়ে গেছে।
বেশ কিছুদিন ধরেই ঝড় আসছি আসব করছে শুনছি। কিন্তু আজ আসছি, কাল আসব করে আসে আর না। আর সত্যি বলতে এলেই বা কি করব? যা হবার তা হবে, যখন হবে তখন তার মোকাবিলা করতে হবে। তো শেষমেষ ঝড় এসেই গেল! বৃষ্টি শুরু হয়ে ছিল রবিবার থেকে। সেদিন আবার শেল্টারে ওটি ছিল। একটা দুটো নয় - পঞ্চান্নটা😄। যাই হোক আমার টিম তৈরিই থাকে। বৃষ্টি ঝোড়ো হাওয়া সবের মধ্যেই ওটি নির্বিঘ্নে হয়ে গেল। শুধু ষোলকলা পূর্ণ করার জন্য আমার হাতে চারটি দাঁত বসিয়ে দিল সেই কালো কুকুরটা😊। যাইহোক ওটিও শেষ কারেণ্টও বাই বাই। ভরসা ইনভার্টার। রাত থেকে বৃষ্টি দমক বেড়ে চলল। সাথে দুরন্ত হাওয়া। সত্যি বলতে আমার জায়গায় অন্