03/26/2024
বয়স ২৫-৩০। বেতন ৩০-৪০ হাজার টাকা। ইন্টার্নশিপ শেষে টাই, স্যুট পরে প্রথম বা দ্বিতীয় অফিস। এর মধ্যে পরিবার থেকে আর্থিক চাপ, কতিপয় বন্ধুর বিলাসী বিয়ের নিমন্ত্রণ, মাস শেষে হাত ফাঁকা, একটা ভালো মোবাইল ফোন কিনতে গিয়ে বার বার ফিরে আসা, বাসায় অসুস্থ বাবা-মা - একবার ভেবে দেখুন কি অসহায় এ বয়সী ছেলেগুলো!!! তারপর বিয়ের পর বাচ্চা নিতে হবে, ছোট বোনকে বিয়ে দিতে হবে, বাবা মাকে হজ্জে পাঠাতে হবে, শ্বশুর বাড়িতে বাজার করতে হবে, অসামন্জস্য সামাজিকতা মেনে নিয়ে দিন শেষে পারিবারিক দ্বন্দ মেটাতে হবে, ঈদে সবার গিফট কিনে সর্বশান্ত হয়ে ঈদের দিন ঘরে বসে থাকতে হবে।
পোস্ট গ্র্যাজুয়েটের পর দেখা স্বপ্নগুলো কাঁচের টুকরের মতন ভেঙে পড়বে নিজের চোখের সামনেই। অথচ পাশের দেশ ইন্ডিয়াতেই ৩০ এর কোঠায় পৌঁছানোর আগেই কর্পোরেট ক্যারিয়ারকে একটা ধাঁচে ফেলে দেয়, যে রিসার্চে আগ্রহী তার পিএইচডি বা থিসিস নিয়ে দেশে দেশে সম্মেলন হয়, উদ্ভাবন নতুন মাত্রা পায়। অথচ আমরা অহেতুক এক্সপেকটেশন কাঁধে চাপিয়ে দিয়ে, বিলাসী বিয়ের ডামাডোল করে ওয়েডিং লোনের বোঝা নিয়ে জীবন শুরু করি। জিম করে, ট্র্যাকিং করে, অনলাইনে পেইড কোর্স করে, সঙ্গীকে নিয়ে কফি খাওয়ার বয়সেই জীবনের প্রতি বিতৃষ্ণা নিয়ে আসি। আর তাই এ নগরের ৭১% যুবক হতাশার বাতাসা খায়, ড্রাগ নেয়, আত্মহত্যা করে। যারা ক্যারিয়ারের যত্ন নেয়, সোশ্যাল এক্টিভিটি করে, নিত্য নতুন গবেষণায় মনোনিবেশ করে- তাদেরকে টেনে ধরার জন্য একদল লোক অসামাজিক বলে তকমা দেয়।অদ্ভুত নিয়ম বানিয়ে সেগুলোকে সামাজিকতা বলেন চালান করেন কিভাবে?
ইন্ডিয়ানরা দাওয়াতে এক প্যাকেট মিষ্টি নিয়ে যায় বলে হাসাহাসি করেন। কিন্তু একবার ভেবে দেখেছেন, ধার করে ৫ কেজি মিষ্টি নেয়ার মহত্ত্ব কোথায়? আকাশচুম্বী এক্সপেকটেশনে নিজের সন্তান, ভাই, বন্ধুটির জীবনকে দুর্বিষহ না করে তাকে এগিয়ে যেতে দিন।জীবনে প্রতিষ্ঠিত হলে প্রথম শাড়িটা মাকেই কিনে দিবে, প্রথম আংটিটা সঙ্গীকে দিবে, বাজারের টাকাটা বাবাকে গুঁজে দিবে, বাড়তি থাকলে আত্মীয়ের বাড়িতে মিষ্টির প্যাকেটও নিতে ভুলবে না। দয়া করে অহেতুক expectation চাপিয়ে দিবেন না।
©Munia Islam Mazumder