22/05/2020
#করোনা_যুদ্ধে_কাজ_করে_যাচ্ছে_প্রাণিসম্পদ_বিভাগ
,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,
বিশ্ব আজ স্থবির, ভালো নেই বাংলাদেশ।এক অজানা দুঃস্বপ্ন আচ্ছন্ন করছে প্রত্যেকটি জীবনকে। এক দুর্বিষহ মানসিক যাতনা ভোগ করছে প্রত্যেকটি প্রাণ। আবার এই প্রাণগুলোকেই বাঁচাতে ছুটে চলছে কিছু মানুষ। বলতে দ্বিধা নেই, সরকারের অন্যান্য বিভাগের পাশাপাশি প্রাণিসম্পদ বিভাগ দেশের এই ক্রান্তিকালে দুধ, মাংস ও ডিম এর মত প্রয়োজনীয় পুষ্টি সরবরাহকে সচল রেখে করোনা যুদ্ধে প্রথম দিন থেকেই নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে,অনেকটা প্রচার-প্রচারণার বাইরে থেকেই।
তারই ধারাবাহিকতায় প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের পদক্ষেপসমূহ ক্রমানুসারে নিম্নে উল্লেখ করা হলো:
১) #মহামারী দুর্যোগের শুরুতেই স্বাস্থ্য অধিদপ্তরকে প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তর প্রায় সাড়ে ১২ হাজার পিপিই প্রদান করেছে।
২) #প্রাণিসম্পদ বিভাগের উদ্যোগে ভ্রাম্যমান বিক্রয় কেন্দ্র চালু করা হয় দেশের প্রত্যেকটি জেলা ও উপজেলাতে। যা পরবর্তীতে দৈনিক দুধ,মাংস ও ডিম বিক্রির টাকার পরিমাণ ছিল প্রায় ৪০ কোটি টাকা।
৩) #দেশের লকডাউন পরিস্থিতিতে খামারিদের চিকিৎসা সেবা নিশ্চিত করার জন্য চালু করা হয় ভ্রাম্যমান ক্লিনিক সেবা।
৪) #সারাদেশে গো-খাদ্যদ্রব্যের মূল্য নিয়ন্ত্রণে বাজার মনিটরিং কার্যক্রম পরিচালনা করে আসছে প্রাণিসম্পদ বিভাগ।
৫) #প্রাণিসম্পদ বিভাগের সকল কর্মকর্তা দেশের বিভিন্ন জেলা-উপজেলায় ত্রাণ কার্যক্রম সুষ্ঠুভাবে বিতরনের জন্য নিয়মিতভাবে মনিটরিং অফিসার ও ট্যাগ অফিসার হি,,,,সেবে কাজ করে যাচ্ছেন জীবনের ঝুঁকি নিয়ে।
৬) #ডেইরি ফার্মারস এসোসিয়েশন ও পোল্ট্রি ফার্মারস অ্যাসোসিয়েশনের নেতৃত্ববৃন্দ ও বিভিন্ন খামারিদের সাথে নিয়মিতভাবে যোগাযোগ রক্ষা করে এবং কন্ট্রোল রুমের মাধ্যমে খামারিদের বিভিন্ন সমস্যার সমাধান এবং উৎপাদন সচল রাখতে বিভিন্ন পরামর্শ দিয়ে আসছে প্রাণিসম্পদ বিভাগ।
৭) #প্রাণিসম্পদ বিভাগ দুর্যোগ পরিস্থিতিতে ক্ষতিগ্রস্ত খামারিদের তালিকা সরজমিনে পরিদর্শনপূর্বক একটি সুনিপুণ তালিকা প্রণয়ন করেছে যা পরবর্তীতে সরকার ঘোষিত ঋণ কার্যক্রম ও প্রণোদনা কার্যক্রমে সহায়ক ভূমিকা পালন করবে।
৮) #দেশের খাদ্য উৎপাদন সচল রাখতে কৃত্রিম প্রজনন কার্যক্রম ও ভ্যাকসিনেশন কার্যক্রম নিয়মিতভাবে পরিচালনা করে আসছে প্রাণিসম্পদ বিভাগ।
৯) #দেশের এই কঠিন পরিস্থিতিতেও বিভিন্ন উন্নয়নমূলক প্রকল্পের কার্যক্রম চলমান রেখেছে।
১০) #বিসিএস প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তাবৃন্দ প্রত্যেকে তাদের বৈশাখী ভাতা থেকে ৫০০০ টাকা মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর ত্রাণ তহবিলে দান করেন।
১১) #মুজিব বর্ষ উপলক্ষে ঘোষিত "স্মার্ট লাইভস্টক ভিলেজের" কার্যক্রম চলমান রেখেছে।
১২) #অনলাইন সেবা ও অফলাইন সেবা নিশ্চিতকল্পে প্রাণিসম্পদ বিভাগের রয়েছে bdvets.com এর মত ওয়েবসাইট, লাইভস্টক ডায়েরি এর মত মোবাইল অ্যাপস এবং ১৬৩৫৮ নাম্বারে খামারিদের এস এম এস করার সুযোগ। এর পাশাপাশি খামারিরা ২৪ ঘন্টা যেকোনো মুহূর্তে প্রাণিসম্পদ বিভাগের সকল পর্যায়ের কর্মকর্তাদের কাছ থেকে সেবা নিচ্ছেন দুর্যোগ এ পরিস্থিতির মধ্যে।
১৪) #ব্রয়লার ও ডিম নিয়ে অপপ্রচার বন্ধ করতে বিভিন্ন মিডিয়াতে প্রচারনা কার্যক্রম চলমান রেখেছে প্রাণিসম্পদ বিভাগ।
১৫) #মাননীয় সচিব স্যারের নির্দেশ মোতাবেক মুজিব বর্ষ উপলক্ষে ব্যক্তিগত পর্যায়ে কর্মকর্তাদের ইনোভেশন কার্যক্রমের অংশ হিসেবে আমার নির্বাচিত ইনোভেশন চরমোনাই ইউনিয়নে "চরাঞ্চলে সমন্বিত পদ্ধতিতে মহিষ ও হাঁস পালন"কার্যক্রম নিয়মিত ভাবে তদারকি চলছে।
১৫) #রাস্তার অবলা প্রাণী বিশেষ করে কুকুরদের খাদ্য সরবরাহ ও চিকিৎসা সেবা দেওয়ার নিমিত্তে স্ট্যান্ড ফর এনিমেলস অরগানাইজেশনের সাথে যৌথভাবে কাজ করে যাচ্ছে বরিশাল প্রাণিসম্পদ বিভাগ।
১৬) #ইতোমধ্যে নিজেদের উদ্যোগে দুইশত পরিবারের কাছে নিত্যপ্রয়োজনীয় খাদ্য সরবরাহ, হ্যান্ড স্যানিটাইজার ও মাস্ক বিতরণ করা হয়েছে এবং ডাক্তারদের কাছে ১৫ টি পিপিই সরবরাহ করা হয়েছে সামাজিক কার্যক্রমের অংশ হিসেবে।
করোনা পরিস্থিতিতে দেশের বিভিন্ন বিভাগের মত প্রাণিসম্পদ বিভাগ ও ভেটেরিনারি ডাক্তারগন ওয়ান হেলথ অ্যাপ্রচ নিয়ে সারা বিশ্বের মতো বাংলাদেশে একযোগে কাজ করে যাচ্ছে। এর অংশ হিসেবে বাংলাদেশ প্রাণিসম্পদ গবেষণা ইনস্টিটিউট নমুনা শনাক্তকরণের কাজ শুরু করেছে, দেশের কোন পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের অংশ হিসাবে প্রথম চট্টগ্রাম ভেটেরিনারি এন্ড এনিমেল সাইন্স বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ ভেটেরিনারি ডাক্তার দের সহযোগিতায় নমুনা পরীক্ষা কার্যক্রম চলমান রেখেছে, এর পাশাপাশি বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়, শেরেবাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় ও হাজী দানেশ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের ভেটেরিনারি ডাক্তারগন প্রাতিষ্ঠানিক উদ্যোগে করোনা মোকাবেলায় বিভিন্নভাবে সহযোগিতা করে আসছে।
সারা বাংলাদেশে প্রাণিসম্পদ বিভাগ দেশের এই কঠিন পরিস্থিতিতে জরুরি সেবার অন্তর্ভুক্ত না হয়েও এবং কোনরকম বাড়তি সুযোগ-সুবিধার আশা ছাড়াই নিঃস্বার্থভাবে মানুষের কল্যাণে তথা দেশের কল্যাণে নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে, যদিও সকল ক্ষেত্রে শতভাগ সফলতা অর্জন করতে পারছে না মূলত জনঅবকাঠামোগত সমস্যার কারণে।
উল্লেখ্য, উপজেলা পর্যায়ে প্রাণিসম্পদ বিভাগের চিকিৎসাসেবা নিশ্চিত করার জন্য মাত্র একজন বা দুইজন ডাক্তার বা কোন কোন ক্ষেত্রে ডাক্তারশূন্য অবস্থায় সেবা দিয়ে যাচ্ছে। বরিশাল সদর উপজেলায় একজন মাত্র ভেটেরিনারি ডাক্তারের উপস্থিতিতে ও তিনজন মাঠ পর্যায়ের কর্মকর্তাদের মাধ্যমে শতভাগ সেবা নিশ্চিত করা সম্ভব না হলেও আন্তরিকতার কোন ঘাটতি রাখছে না।
দুধ, মাংস ও ডিম উৎপাদন সচল রাখতে প্রাণিসম্পদ বিভাগের ভূমিকা ইতিমধ্যে জনসাধারণের মাঝে বেশ প্রশংসিত হয়েছে বিশেষ করে খামারিদের মধ্যে উৎফুল্লতা লক্ষ করা যাচ্ছে। দেশের এই ক্রান্তিকালে প্রাণিসম্পদ বিভাগ ও খামারিরা নিরবিচ্ছিন্নভাবে তাদের কর্মযজ্ঞ চালিয়ে যাচ্ছে বলে বাজারে এ সকল প্রাণীজ আমিষ এর সরবরাহ সচল রয়েছে যা বৈশ্বিক চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় ও রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধির পাশাপাশি অর্থনৈতিক চাকা বেগবান রেখে এসডিজি এর লক্ষ্যমাত্রা পূরণ করে ২০৪১ এর আগে উন্নত বাংলাদেশ গড়ার প্রত্যয়ে এগিয়ে যাবে। কারণ মেধাবী জাতি গঠনে দুধ, মাংস ও ডিমের বিকল্প নেই, আর মেধাবী জাতি কেবল ভবিষ্যতের উন্নত বাংলাদেশ গড়ার কারিগর হবে। মাংস ও ডিম উৎপাদনের স্বয়ংসম্পূর্ণতা এটাই নিশ্চিত করে বাংলাদেশ ইতোমধ্যে সেদিকেই ধাবমান রয়েছে। পরবর্তী পৃথিবীর মেধাবী জাতি গঠনে পূর্বের ন্যায় ভবিষ্যতেও কান্ডারী হবে প্রাণিসম্পদ বিভাগ এই কামনায় শেষ করছি।
#লেখক:
ডা. মো: ইব্রাহীম খলিল
ভেটেরিনারি সার্জন
বিসিএস ( প্রাণিসম্পদ)
উপজেলা প্রাণিসম্পদ দপ্তর,
বরিশাল সদর, বরিশাল।
We know your value and importance of Livestock, are the great effective source of income for rural poeple in Bangladesh, So does We cares