26/11/2023
বিড়াল সম্পর্কে কিছু মজাদার তথ্যঃ
তুলতুলে আরামপ্রিয় প্রাণী মানেই বিড়াল। খুব কম মানুষ আছেন যারা বিড়াল ভালবাসেন না। নানা জাতের বিড়াল আছে পৃথিবীতে কিন্তু এদের বৈশিষ্ট্যগুলো কিন্তু একই রকম। আপনার ঘরে এমন কোন বন্ধু থাকলে অবশ্যই তার ব্যাপারে জানা উচিত। তাহলে দেরী না করে চলুন জেনে আসি বিড়ালের অজানা মজার তথ্য গুলো।
বিড়াল মাটিতে গড়াগড়ি দেয়ঃ
বিড়াল যদি মেঝেতে খুব গড়াগড়ি খায় তখন আপনাকে বুঝতে হবে সে এই মুহূর্তে কিছুটা সময় চাচ্ছে এবং খেলতে চাচ্ছে। অনেক বিড়াল তার মনিবের বাইরে যাবার সময় এমনটি করে থাকে যাতে তাকেও সাথে নেয়া হয় অথবা মনিব বাইরে না যায়। এটা দৃষ্টি আকর্ষণ করার একটি সুন্দর পদ্ধতি। এই জন্য অরা এত আদুরে।
বিড়াল খাবার পুরোটা খায় নাঃ
বিড়াল একসাথে সবটুকু খাবার শেষ করে না। অনেক সময় ধরে খেয়ে খাবারের কিছু অংশ বাঁচিয়ে রাখে। মজার ব্যাপার হলো এমনটি সে তার মনিব থেকেই শিখে। যে সকল বাড়িতে মনিব তার বেঁচে যাওয়া খাবার থেকে বিড়ালকে খেতে দেয়, সেই সকল বাড়িতেই বিড়ালগুলো নিজের খাবার মনিবের জন্য বাঁচিয়ে রাখতে শেখে।
বিড়াল কেন ঘাস খায়ঃ
বিড়াল সাধারণত মাংসাশী প্রাণী। কিন্তু যখন ঘাস পাতা খেতে শুরু করে তখন খুব অদ্ভুত লাগে তাই না? আসলে বিড়ালের ঘাস খাবার পেছনে কারণ হলো এরা ঘাস থেকে এক ধরণের ভিটামিন পায়। যা এদের হজম শক্তি ভাল রাখে। কখনো কখনো নিজের গা চুলকাতে গিয়ে মুখে জড়িয়ে যাওয়া পশম ছাড়াতেও এরা ঘাসের সাহায্য নেয়।
বিড়াল কেন ঘষাঘষি করেঃ
অনেক সময় দেখা যায় বিড়াল তার পা আরেক বিড়ালের গায়ে অথবা মেঝেতে পিষছে। এর কারণ হলো তারা অন্য বিড়ালের প্রতি যত্ন বা মমতা দেখায় অথবা নিজের পায়ের রক্তসঞ্চালন ঠিক রাখতে এরা এমন করে থাকে। অনেক সময় বাচ্চা বিড়াল তার মায়ের বুকের দুধ ঠিকমত না পেলে তখন মায়ের গায়ে এভাবে পা ঘষতে থাকে।
বিড়ালেরা ফোনের প্রতি আসক্তঃ
যারা বিড়াল পালেন, তারা লক্ষ্য করে থাকবেন ফোনটি বেজে উঠলেই বাড়ির বিড়ালটি সবার আগে দৌড়ে ফোনের কাছে চলে যায়। এর কারণ হলো কৌতুহল। এরা বোঝার চেষ্টা করে আসলে ফোনে কীভাবে কথা বলা যায় অথবা কার সাথে কথা বলা যায় কিংবা কাউকে দেখা যাচ্ছে না তবুও মনিব কার সাথে কথা বলছে। এসব প্রশ্নের উত্তর খুঁজতেই বিড়াল সাধারণত ফোনের কাছে সবার আগে দৌড়ে যায়। তাছাড়া এরা আরও লক্ষ্য করে যে ফোনে কথা বলার সময় তাদের প্রতি মনিবের মনোযোগ কিছুটা কমে যায়। তাই মনোযোগ কেড়ে নেয়া উত্সটি তারা নিজেরাই এত আগ্রহ নিয়ে দেখে।
বিড়াল সম্পর্কে আপনি এই তথ্যটি শুনলে আপনার মন খারাপ হতে পারেঃ
হয়তো ভাবছেন এ কথাটি কেন বলছি? বিড়াল সারাদিনই নিজের গা হাত পা চাটে। কারণ, মানুষ গায়ে হাত দেয়ার পর বিড়ালরা নিজেদের গা পরিষ্কার করে! মানুষের গায়ের গন্ধ বিড়াল একদম পছন্দ করে না। এবার বুঝলেন, ওদের ক্লাশটা? কেমন যেন একটু লজ্জা-লজ্জা লাগছে তাই না? মন খারাপ করবেন না ওরা এমনি।এই তথ্যটি নেয়া হয়েছে 'অসাধারণ জ্ঞান' বইটি থেকে। বইটি লিখেছেন স্বরূপ দত্ত এবং পার্থ প্রতিম চন্দ্র।
বিড়ালের গোঁফ যখন মাপযন্ত্রঃ
গোঁফহীন বিড়াল দেখেছেন কখনো? গোঁফহীন বিড়াল হয়ইনা, দেখবেন কি করে! গোঁফ দিয়ে খুব গুরুত্বপূর্ণ কাজও করে বিড়াল। ছোট্ট গর্ত দিয়ে যেতে চাইলে বিড়াল কিন্তু ওই গোঁফ দিয়েই মেপে নেয়, তারপর ঠিক করে যাওয়ার চেষ্টা করবে কিনা। একটা বিশেষ সুবিধাও আছে ওদের। কলারবোন নেই বলে মাথাটা গলিয়ে দিলেই হলো, তারপর অনায়াসে চলে যায় গর্তের ওপারে।
নাক করে জিভের কাজঃ
মানুষের জিভে ৯ হাজার এমন ধরনের 'সেন্সর' আছে যেসবের কাজই হলো খাবারের স্বাদ পরীক্ষা করা। বিড়ালের জিভে সেরকম সেন্সর মাত্র ৪৭৩টি। ফলে স্বাদ বোঝার কাজে তাদের জিভ অনেক কম কার্যকর। বিড়াল তাই বাধ্য হয়ে খাবারে স্বাদ বোঝে নাক দিয়ে গন্ধ শুঁকে।
বিড়ালের নাকের ছাপঃ
বিড়াল নাকি গোঁফ দিয়ে চেনা যায়? যারা বলেন, ভুল বলেন। প্রতিটি মানুষের ফিঙ্গারপ্রিন্ট বা আঙুলের ছাপ যেমন একেবারে আলাদা, সেরকমই বিড়ালের নাক। একেক বিড়ালের একেকরকম নাক। সুতরাং সব কিছু কাকতালীয়ভাবে যদি কখনো মিলেও যায়, তবু দুটো বিড়ালের নাক কখনো হুবহু একরকম হতে পারেনা। কিছু না কিছু পার্থক্য থাকবেই।
বিড়াল মানুষের রক্তচাপ কমাতে পারেঃ
গায়ে হাত বোলালে বা কোলে নিয়ে আদর করলে বিড়াল যে আহ্লাদ করে ঘরঘর আওয়াজ করে, সেই আওয়াজ শুনলে নাকি মানুষের উচ্চ রক্তচাপ কমে যায়। এক গবেষণায় প্রমাণিত হয়েছে এটা।
অন্ধকারে দেখে ভালোঃ
অন্ধকারে খুব ভালো দেখে বিড়াল। কোনো কিছু পরিষ্কার দেখার জন্য মানুষের যতটা আলোর প্রয়োজন তার ছয় ভাগের একভাগ আলোতেই সেই বস্তুটি পরিষ্কার দেখতে পারে বিড়াল।
সবচেয়ে বড় চোখঃ
পৃথিবীর সব প্রাণীর মধ্যে শরীরের অনুপাতে বিড়ালের চোখই সবচেয়ে বড়। হাতি খুব বড়, তিমি মাছও বিশাল, তাদের চোখ কিন্তু শরীরের অনুপাতে বিড়ালের তুলনায় অনেক ছোট।