26/11/2021
গাপ্পি মাছের রোগ এবং তার প্রতিকার ( diseases and treatment ) ?
গাপ্পি মাছের সাধারনত যে রোগ গুলি দেখা যায় সেগুলি হোল ১) মাউথ ফাঙ্গাস , ২) লেজ/ পাখনা পচা রোগ ,৩) ফাঙ্গাস ৪) ড্রপসি ।
১) মাউথ ফাঙ্গাস ঃ এই রোগ হলে মাছের ২ টী ঠোট সাদা হয়ে যায়। মাছ নিস্তেজ হয়ে পরে , কিছু খেতে চায়না । চুপচাপ এক জায়গায় ভেসে থাকে বা নিচে বসে থাকে। ১—২ দিন পরে মারা যায় ।
প্রতিকার ঃ এই রোগ হলে , একটি পাত্রে ১ লিটার জল নিন ,ওই জলে ১০—১২ টি পটাসিয়াম পারমাঙ্গানেট এর দানা গুলে নিন।তারপর ওই জলে আক্রান্ত মাছটিকে ১—২ মিনিট রেখে দিন তারপর মাছটিকে অ্যাকুরিয়ামে ছেড়ে দিন ।এই ভাবে দিনে ২ বারকরে ৩থেকে ৪ দিন করুন । প্রতি দিন ওষুধ নতুন করে গুলে নেবেন ।
২) লেজ পচা বা পাখনা পচা রোগ ঃ এই রোগ হলে মাছের লেজ বা পাখনা বা দুটোই এক সঙ্গে পচন ধরে মাছ ভালো করে চলতে পারে না , নিস্তেজ হয়ে পড়ে , খাওয়া বন্ধ করে দেয়.১ দিন বা ২দিন পরে মাছ মারা যায় । এই রোগ খুব ছোঁয়াচে , সাধারনত এক টি মাছের হলে খুব তাড়া তাড়ি সবকটি মাছ আক্রান্ত হয়ে পড়ে । এই রোগের উপসর্গ দেখতে পাওয়া মাত্র চিকিৎসা সুরু করে দেবেন।
প্রতিকার ঃ এই রোগের লক্ষন দেখতে পেলে প্রথমে অ্যাকুরিয়ামের জল ৫০ ভাগ বদল করে দিন এবং ফিল্টার পরিস্কার করে দিন । অ্যাকুরিয়ামের জলে ২ ফোঁটা / ১০ লিটার জলের হিসাবে মালাসাইট গ্রীন ওষুধ ব্যাবহার করুন । ৩ থেকে ৪ দিন ওষুধ ব্যাবহার করবেন ।
৩) ফাঙ্গাস ঃ এই রোগ হলে মাছের গায়ে ছাপ ছাপ সাদা সাদা দাগ হয় অথবা সারা গায়ে পাতলা সাদা রঙের একটি আস্তরন দেখতে পাওয়া যায় । মাছ নিজের গা ঘসতে থাকে ,আস্তে আস্তে নিস্তেজ হয়ে পড়ে .১ থেকে ২ দিনের মধ্যে মাছ মারা যায় ।
প্রতিকার ঃ এই রোগ হলে অ্যাকুরিয়ামের জল ২০থেকে ৩০ শতাংশ বদল করে দিন, জলে ৫ গ্রাম / ১০ লিটার পিছু অ্যাকুরিয়াম সল্ট দিন না পেলে সন্ধক লবন দিন । জলের তাপমাত্রা ৩০ ডিগ্রি সেন্টিগ্রেড এ করে দিন । ওই জলে মালাসাইট গ্রীন ২ ফোটা করে প্রতি ১০ লিটার জলের হিসাবে দিন। ওই ওষুধ ৪ থেকে ৫ দিন ব্যাবহার করুন ।
৪) ড্রপসি ঃ এই রোগ হলে মাছের আঁশ গুলি খাড়া খাড়া হয়ে ওঠে। মাছের চেহারা অনেক টা বেলুনের মত দেখতে হয়ে যায়। এই রোগ খুব ছোঁয়াচে । এই রোগের প্রাথমিক উপসর্গ বুঝতে পারা যায় না , যখন মাছের আঁশ ফুলে ওঠে তখন ই কেবল মাত্র বোঝা যায় । আর আঁশ ফুলে যাবার পর আর মাছের কোন রকম চিকিৎসা করে লাভ হয় না । আমার ৩০ বৎসর এর অভিজ্ঞতায় আমি ১০০ বারের মধ্যে মাত্র ২ বার আক্রান্ত মাছ কে সুস্থ করতে পেরেছিলাম, তাও গাপ্পি মাছের ক্ষেত্রে নয়, ২ বার ই গোল্ড ফিশ কে সারাতে সক্ষম হয়েছিলাম ।
প্রতিকার ঃ এই রোগ খুব ই সংক্রামক । তাই একটি মাছের হলে সব মাছের ই এই রোগে আক্রান্ত হবার সম্ভাবনা ৯৯ শতাংশ । তাই কোন একটি মাছ এই রোগে আক্রান্ত হলে সত্তর ব্যাবস্থা নিতে হবে । এই রোগের উপসর্গ দেখা গেলে প্রথমে আপনার অ্যাকুরিয়ামের ৫০ ভাগ জল বদল করুন , ফিল্টার পরিস্কার করে দিন , জলে ৫ গ্রাম প্রতি ১০ লিটার জলের হিসাবে লবন দিন । এর সাথে মেথিলিন ব্লু ২ ফোটা প্রতি ৫ লিটার জলের হিসাবে ব্যাবহার করুন ।
সংগৃহীত