26/12/2023
এ্যানিমেল হাজবেনন্ড্রি কাউন্সিল ২০২৩ বাংলাদেশ প্রাণীসম্পদ অধিদপ্তর আইন এবং বাংলাদেশ ভেটেরিনারি কাউন্সিল আইন ২০১৯ সালের সাথে সাংঘর্ষিক।
লেখাঃ Dr. Md. Nure Alam
আপনারা সবাই অবগত আছেন, যথাযথ প্রক্রিয়া অনুসরণ বা আইন প্রণয়নের প্রচলিত ধাপ অনুসরণ না করে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের সচিব মহোদয় সুফলভোগী একটি পক্ষের ইচ্ছামত ও সংশ্লিষ্ট কোর ডিপার্টমেন্ট (প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তর) এবং হুবহু একই বিষয়াবলী নিয়ন্ত্রণকারী আরেকটি আইন “বাংলাদেশ ভেটেরিনারি কাউন্সিল এক্ট-২০১৯ (বিভিসি এক্ট-২০১৯)” এর প্রণেতা ও রেগুলেটরি বডি বাংলাদেশ ভেটেরিনারি কাউন্সিলের সাথে কোনরকম আলোচনা ছাড়াই “বাংলাদেশ এনিমেল হাজবেন্ড্রি কাউন্সিল আইন -২০২৩ (বিএএইচসি -২০২৩)” প্রণয়নের জন্য নীতিগত সিদ্ধান্ত গ্রহন করেছেন।
অনেকেই প্রশ্ন করছেন, এএইচ গ্রেজুয়েটদের আলাদা আইন থাকলে সমস্যা কি? তাদের জন্য আইনের ধারা ও এদের ভেতর লুক্কায়িত মারপ্যাচগুলো আলোচনা করি।
❎ আইনটির ২(১১) ধারায় - “এ্যানিমেল হাজবেন্ড্রি” অর্থ এ্যানিমেল হাজবেন্ড্রি শিক্ষা ও পেশায় দেশীয় বা আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত প্রাণীর উৎপাদন, প্রজনন, পুষ্টি, রোগ প্রতিরোধ ও ব্যবস্থাপনা, খামার ব্যবস্থাপনা, প্রযুক্তি সম্প্রসারন ইত্যাদি সংক্রান্ত বিষয়াবলি; উল্লেখ করা হয়েছে।
❎ ২(১৫) “এ্যানিমেল হাজবেন্ড্রি প্র্যাকটিস” অর্থ প্রাণীর উৎপাদন, প্রজনন, পুষ্টি, রোগ প্রতিরোধ ও ব্যবস্থাপনা, প্রযুক্তি সম্প্রসারণ কার্যক্রম, মাংস, দুধ ও ডিম উৎপাদন, ভ্যালু এডেড প্রোডাক্ট উৎপাদন, প্রাণী উৎপাদন বিষয়ে গবেষণা, কৃত্রিম প্রজনন বিষয়ে শিক্ষা ও প্রশিক্ষণ প্রদান বা পরামর্শ প্রদান।
✅ অথচ উৎপাদন, প্রজনন সরাসরি থেরিওজেনোলজির অন্তর্ভুক্ত বিষয়। যখনই প্রজনন,উৎপাদন সংক্রান্ত বিষয় আসবে তখনই হরমোনাল মেনেজমেন্ট চলে আসবে, এম্ব্রায়ো ট্রান্সফার নিয়ে ভাবলেই সার্জিকেল মেনেজমেন্ট, স্পেশালাইজড হরমোনাল কন্ট্রোল ও মেনেজমেন্ট চলে আসবেই। এগুলো একজন ভেটেরিনারিয়ান এর কোর কাজ। কোন ভাবেই ভেটেরিনারিয়ান এর বাইরে যাবার সুযোগ নেই।
✅ ইনফারটিলিটি, ডিসটোকিয়া ম্যানেজমেন্ট একজন ভেটেরিনারিয়ান ছাড়া কিভাবে হবে?
✅ প্রাণী উৎপাদন বিষয়ে গবেষণা করতে গেলেও বিএএইচসি -২০২৩ অনুসারে অনুমোদন নিয়ে করত হবে? প্রফেসর ডঃ শামসুদ্দিন স্যারের ফিলড ফার্টিলিটি ক্লিনিক, প্রফেসর ডঃ ফরিদা ইয়াসমিন বারি স্যারের টেস্ট টিউব বেবি ল্যাব কিংবা পরফেসর ডঃ নাসরিন সুলতানা স্যারের সেক্সড সিমেন কার্যক্রম কার অনুমতি নিয়ে করবে? উক্ত কাউন্সিলের অনুমোদন ছাড়া করলেতো জেল জরিমানা করে দিবেন! আপনারা কি অনুমোদন দিবেন ওনাদের?
✅ পুষ্টি ম্যানেজমেন্ট নিয়ে কথা বলতে গেলেই অপুষ্টি নিয়ে কথা বলতে হবে, তাইতো,নাকি? তো অপুষ্টি সমস্যা সমাধানে প্রেসক্রিপশন কে করবে?
✅ রোগ প্রতিরোধ ট্রায়াংগেল – ভ্যাক্সিনেশন, বায়োসিকিউরিটি ম্যানেজমেন্ট, মেডিসিন দিয়ে চিকিৎসা। ইনফেকশাস ডিজিজের অরগানিজম আইসোলেশন, ভ্যাক্সিন ডেভেলপ করা ভেটেরিনারি এপিদেমিওলজিস্ট, প্যাথলজিস্ট, মাইক্রোবায়োলজিস্ট এর কোর কাজ।
✅মেডিসিন ব্যবহার মানে প্রেসক্রিপশন করতে গেলেই বিদ্যমান বাংলাদেশ ভেটেরিনারি কাউন্সিল আইন লংগন হবে। ভেটেরিনারিয়ান ব্যতীত এনিমেল এর জন্য প্রেসক্রিপশন করার অধিকার কারো নেই। তাহলে কি দাঁড়ালো? মহান জাতীয় সংসদে পাশ হওয়া একটি আইনকে অকার্যকর আরেকটি আইন করা হলো।
❎ ৩। আইনের প্রাধান্য- আপাতত বলবৎ অন্য কোনো আইনে ভিন্নতর যাহা কিছুই থাকুক না কেন, এই আইনের বিধানাবলি প্রাধান্য পাইবে।
✅ এই শর্তানুসারে পুর্ববর্তি সকল আইন অকার্যকর হয়ে যায়! “বাংলাদেশ ভেটেরিনারি কাউন্সিল এক্ট-২০১৯ (বিভিসি এক্ট-২০১৯)” আপাতত বলবৎ আছে। তাই যেখানেই এই আইনের সাথে সংঘর্ষ বাধবে সেখানেই নতুন আইনের এই শর্তানুযায়ী বিভিসি এক্ট তার কার্যকারিতা হারাবে। ভেটেরিনারিয়ানদের প্রতিটি পদক্ষেপ বাধাগ্রস্থ হবে।
✅ ৪(২) কাউন্সিল একটি সংবিধিবদ্ধ সংস্থা হইবে এবং ইহার স্থায়ী ধারাবাহিকতা ও একটি সাধারণ সিলমোহর থাকিবে এবং এই আইনের বিধানাবলি সাপেক্ষে, ইহার স্থাবর ও অস্থাবর উভয় প্রকার সম্পত্তি অর্জন করিবার, অধিকারে রাখিবার ও হস্তান্তর করিবার ক্ষমতা থাকিবে এবং ইহা স্বীয় নামে মামলা করিতে পারিবে এবং উক্ত নামে ইহার বিরুদ্ধেও মামলা করা যাইবে।
✅ উক্ত ধারা অনুসারে যেখানে যেখানে ভেটেরিনারিয়ানদের আটকাতে চাইবেন, মামলা করে দিবেন। অতীত ইতিহাস বলে মামলার জন্য দশ বছর বিসিএস এ নিয়োগ বন্ধ ছিলো, যার পর ১৯ তম স্পেশাল বিসিএস হয়। কেউ দ্বিমত করবেনা সেই দশ বছরের ক্ষতি ডিএলএস এখনো কাটিয়ে উঠতে পারেনি। পালটা পালটি মামলা জনস্বার্থের বারোটা বাজাতে পারে।
❎ ১৭। নিবন্ধন ও সনদ ব্যতীত এ্যানিমেল হাজবেন্ড্রি প্র্যাকটিস নিষিদ্ধ- আপাতত বলবৎ অন্য কোনো আইনে যাহা কিছুই থাকুক না
কেন, এই আইনের অধীন নিবন্ধন ও সনদ ব্যতীত কোনো ব্যক্তি এ্যানিমেল হাজবেন্ড্রিয়ান প্র্যাকটিস করিতে বা নিজেকে এ্যানিমেল
হাজবেন্ড্রিয়ান বলিয়া পরিচয় প্রদান করিতে পারিবেন না।
❎ ২৩। নিবন্ধিত এ্যানিমেল হাজবেন্ড্রি প্র্যাকটিশনারের বিশেষাধিকার-
(১) শুধুমাত্র নিবন্ধিত এ্যানিমেল হাজবেন্ড্রি প্র্যাকটিশনার সরকারি, আধা-সরকারি, স্বায়ত্বশাসিত, বে-সরকারি বা কোনো স্থানীয়
কর্তৃপক্ষের সহায়তায় পরিচালিত বিভিন্ন ব্রিডিং বুল স্টেশন, সিমেন প্রক্রিয়াজাতকারী প্রতিষ্ঠান, গবাদপিশুর খামার, ফিডমিল, হাঁস- মুরগীর হ্যাচারি, দুধ-মাংস-ডিম ইত্যাদি প্রক্রিয়াজাতকারী প্রতিষ্ঠান, হাঁস-মুরগী ও গবাদপিশুর খাদ্য সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানসহ এ্যানিমেল হাজবেন্ড্রি বিষয়ক পদ সমূহে নিয়োগ লাভের যোগ্য হইবেন।
✅ এই ধারাগুলোর আলোকে কোন ভেটেরিনারিয়ান কোন ব্রিডিং বুল স্টেশন, সিমেন প্রক্রিয়াজাতকারি প্রতিষ্টান, ডেইরি-পোল্ট্রি খামার, ফিডমিল, হাঁস-মুরগীর হ্যাচারি, দুধ-মাংস-ডিম ইত্যাদি প্রক্রিয়াজাতকারী প্রতিষ্ঠান, হাঁস-মুরগী ও গবাদপিশুর খাদ্য উৎপাদনকারী সরকারি-বেসরকারি-স্বায়ত্বশাসিত প্রতিষ্ঠানে কাজ করার অধিকার হারাবেন!
এটি ভেটেরিনারি প্রফেশনের উপর কত বড় আঘাত তা অননুমেয়!
❎ (৩) আপাততঃ বলবৎ কোনো আইনের অধীন এ্যানিমেল হাজবেন্ড্রি বিষয়ক কোনো সনদ স্বাক্ষর বা সত্যায়নের প্রয়োজন হইলে,
শুধুমাত্র নিবন্ধিত এ্যানিমেল হাজবেন্ড্রি প্র্যাকটিশনার এইরূপ স্বাক্ষর বা সত্যায়ন করিতে পারিবেন।
❎ ২৪। বেসরকারি প্রাণী পুষ্টি ল্যাবরেটরি, কৃত্রিম প্রজনন ল্যাবরেটরি, এ্যানিমেল হাজবেন্ড্রি বিষয়ক ল্যাবরেটরি ইত্যাদির স্বীকৃতি।
কোন ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠান বাণিজ্যিক প্রয়োজনে কোনো প্রাণী পুষ্টি ল্যাবরেটরি, কৃত্রিম প্রজনন ল্যাবরেটরি, এ্যানিমেল হাজবেন্ড্রি বিষয়ক ল্যাবরেটরি ইত্যাদি পরিচালনা করিতে চাহিলে তাহাকে স্বীকৃতির জন্য নির্ধারিত পদ্ধতিতে কাউন্সিলের নিকট আবেদন করিতে হইবে।
❎ ২৫। বেসরকারি প্রাণী পুষ্টি ল্যাবরেটরি, কৃত্রিম প্রজনন ল্যাবরেটরি, এ্যানিমেল হাজবেন্ড্রি বিষয়ক ল্যাবরেটরি ইত্যাদির স্বীকৃতি
প্রত্যাহার-
❎(১) কাউন্সিলের নিকট যদি প্রতীয়মান হয় যে, কোনো প্রাণীপুষ্টি ল্যাবরেটরি, কৃত্রিম প্রজনন ল্যাবরেটরি, এ্যানিমেল হাজবেন্ড্রি বিষয়ক ল্যাবরেটরি ইত্যাদি কর্তৃক-
❎২৮। পরিদর্শন-
কাউন্সিল কর্তৃক ক্ষমতাপ্রাপ্ত কোনো কর্মচারী কোনো এ্যানিমেল হাজবেন্ড্রি সংশ্লিষ্ঠ প্রতিষ্ঠান বা তদকর্তৃক গৃহীত পাঠ্যসূচি, পরীক্ষা গ্রহণ পদ্ধতি, প্রশিক্ষণ ও এতদসংক্রান্ত অন্যান্য কার্যক্রম সরেজমিনে পরিদর্শন করিতে পারিবেন এবং পরিদর্শন সম্পর্কিত প্রতিবেদন রেজিস্ট্রারের নিকট দাখিল করিবেন।
❎৩১। কাউন্সিলের স্বীকৃতি ব্যতিরেকে বেসরকারি প্রাণী পুষ্টি ল্যাবরেটরি, কৃত্রিম প্রজনন ল্যাবরেটরি, এ্যানিমেল হাজবেন্ড্রি বিষয়ক ল্যাবরেটরি ইত্যাদি কার্যক্রম পরিচালনার দন্ড-
❎(১) কোনো ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠান ধারা ৩০ এর অধীন স্বীকৃতি গ্রহণ ব্যতিরেকে কোনো বেসরকারি প্রাণী পুষ্টি ল্যাবরেটরি, কৃত্রিম প্রজনন ল্যাবরেটরি, এ্যানিমেল হাজবেন্ড্রি বিষয়ক ল্যাবরেটরি ইত্যাদি পরিচালনা করিলে উহা এই আইনের অধীন অপরাধ বলিয়া গণ্য হইবে এবং অপরাধের সহিত প্রত্যক্ষ সংশ্লিষ্টতা রহিয়াছে এইরূপ প্রতিষ্ঠানের মালিক, পরিচালক, ব্যবস্থাপক, সচিব বা অন্য কোনো কর্মচারী উক্ত অপরাধ করিয়াছেন বলিয়া গণ্য হইবে, যদি না অভিযুক্ত ব্যক্তি প্রমাণ করিতে পারেন যে, অপরাধটি তাহার অজ্ঞাতসারে সংঘটিত হইয়াছে এবং তাহা রোধ করিবার জন্য তিনি যথাসাধ্য চেষ্টা করিয়াছেন।
(২) উপ-ধারা (১) এর অধীন সংঘটিত অপরাধের জন্য অনধিক ২ (দুই) বৎসর কারাদন্ড বা অনধিক ৫ (পাঁচ) লক্ষ টাকা অর্থদন্ড বা উভয় দন্ডে দন্ডনীয় হইবে এবং উক্ত অপরাধ অব্যাহত থাকিলে প্রতিদিনের জন্য ৫০ (পঞ্চাশ) হাজার টাকা অর্থদন্ডে দন্ডনীয় হইবেন।
✅ এই ধারাগুলো সরাসরি বিদ্যমান বিভিসি এক্ট, পশু রোগ আইন কে চ্যালেঞ্জ করা হচ্ছে।
✅ প্রাণীপুষ্টি ল্যাবরেটরি, কৃত্রিম প্রজনন ল্যাবরেটরি স্থাপন করতে ডিএলএস থেকে বিশেষ প্রক্রিয়ার মাধ্যমে অনুমতি নিতে হয়। কিন্তু এই আইন প্রস্তাবিত কাউন্সিল কে উক্ত ক্ষমতায়ন করবে। ফলে ডিএলএস তার রেগুলেটরি ক্ষমতা হারাবে।
✅ শুধু তাই নয়- পরিদর্শন করার ক্ষমতা উক্ত কাউন্সিল কে ভেতেরিনারিয়ান দের দ্বারা পরিচালিত এসকল গবেষণা ও বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠান গুলোকে হুমকির মুখে ফেলে দেব।
✅ যেসব ইউনিভার্সিটিতে কম্বাইন্ড কোর্স চালু আছে সেসব জায়গায় ইন্টারফেয়ার করবে। আইনের ধারা অনুসারে প্রশাসনিক ব্যবস্থা নেবে।
❎ ২৯। নিবন্ধন ও সনদ ব্যতীত এ্যানিমেল হাজবেন্ড্রি প্র্যাকটিস করিবার দন্ড-
কোনো ব্যক্তি নিবন্ধন ও সনদ ব্যতীত এ্যানিমেল হাজবেন্ড্রি প্র্যাকটিস করিলে উহা এই আইনের অধীন অপরাধ বলিয়া গণ্য হইবে এবং তজ্জন্য তিনি অনধিক ৩ (তিন) বৎসর কারাদন্ড অথবা অনধিক ২ (দুই) লক্ষ টাকা অর্থদন্ড অথবা উভয় দন্ডে দন্ডনীয় হইবেন।
৩২। মিথ্যা বা প্রতারণার আশ্রয় গ্রহণ করিবার দন্ড-
(১) কোনো ব্যক্তি-
(ক) নিবন্ধিত না হইয়া নিজেকে এ্যানিমেল হাজবেন্ড্রি প্র্যাকটিশনার বলিয়া পরিচয় প্রদান করিলে;
(খ) প্রতারণা করিয়া এ্যানিমেল হাজবেন্ড্রি প্র্যাকটিশনার হিসাবে নিবন্ধন করিলে বা নিবন্ধন করিবার উদ্যোগ গ্রহণ করিলে;
(গ) প্রতারণামূলকভাবে তাহার নাম, পদবির সহিত নিবন্ধিত প্র্যাকটিশনার মর্মে কোনো শব্দ, বর্ণ বা অভিব্যক্তি ব্যবহার করিলে; (ঘ) মিথ্যা বা প্রতারণার আশ্রয় গ্রহণ করিয়া এ্যানিমেল হাজবেন্ড্রি প্র্যাকটিশনার হিসাবে প্রতিনিধিত্ব করিলে;
✅ নিশ্চিত করে বলা যায় কোন ভেটেরিনারিয়ান কোন ব্রিডিং বুল স্টেশন, সিমেন প্রক্রিয়াজাতকারি প্রতিষ্টান, ডেইরি-পোল্ট্রি খামার, ফিডমিল, হাঁস-মুরগীর হ্যাচারি, দুধ-মাংস-ডিম ইত্যাদি প্রক্রিয়াজাতকারী প্রতিষ্ঠান, হাঁস-মুরগী ও গবাদপিশুর খাদ্য উৎপাদনকারী সরকারি-বেসরকারি-স্বায়ত্বশাসিত প্রতিষ্ঠানে কাজ করলে উক্ত ধারাগুলোর আওতায় জরিমানা বা জেল অথবা উভয় দন্ডে দন্ডিত হবেন।
✅ভেটেরিনারিয়ান দের কাজের ক্ষেত্র সংকোচন হবে।
সরকারি পোস্টে কাউন্সিল এর রেজিষ্ট্রেশন বাধ্যতামূলক করে দিয়ে এপ্লাই করারই সুযোগ দেয়া হবেনা।
✅অথচ প্রকাশ্য বর্তমানে পাশ করা প্রতিবছর প্রায় দেড় হাজার গ্রেজুয়েট এসকল প্রতিষ্ঠান এ চাকরি করছেন।
✅ উপরোক্ত আলোচনার মাধ্যমে কারো অস্পষ্ট থাকার কথা নয় কেন আপামর ভেটেরিনারিয়ান উক্ত আইনের বিরোধিতা করছেন।
✅সাধারণত যে কোন আইন প্রণয়নের ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট স্টেকহোল্ডারদের সাথে ব্যাপকভাবে মতবিনিময় ও আলোচনাক্রমে আইনের খসড়া প্রস্তুত করা হয়। উল্লেখ্য যে, মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের প্রধান কারিগরী সংস্থা প্রানিসম্পদ অধিদপ্তর। বর্তমানে উক্ত অধিদপ্তরের আওতায় এগার (১১) টি আইন বিদ্যমান। প্রতিটি আইনের খসড়া প্রাথমিকভাবে অধিদপ্তরে প্রণীত হয়েছে। অতঃপর সেগুলো যথাযথ কর্তৃপক্ষের মাধ্যমে মন্ত্রণালয়ে প্রেরিত হয়েছে। কিন্তু দুর্ভাগ্যবশত উক্ত আইনের ক্ষেত্রে এসব প্রক্রিয়া অনুসৃত হয়নি। তাছাড়া বাংলাদেশ ভেটেরিনারি কাউন্সিলের সাথেও কোনরুপ আলোচনা না করে বরং প্রানিসম্পদ অধিদপ্তর ও বাংলাদেশ ভেটেরিনারি কাউন্সিল কে পাশ কাটিয়ে সচিব মহোদয় স্ব-উদ্যোগে বাংলাদেশ এনিমেল হাজবেন্ড্রি কাউন্সিল আইন ২০২৩ বাস্তবায়নের উদ্যোগ গ্রহণ করেন।
✅ উল্লেখ্য যে, এনিমেল হাজবেন্ড্রি কাউন্সিল আইন নামে কোন আইন পৃথিবীর কোন দেশে অস্থিত্ব নেই (সম্প্রতি পাকিস্তানের একটি প্রস্তাবিত বিলের রেফারেন্স দিচ্ছেন কিন্তু সেই বিলটি বাতিল হয়েছে) এবং প্রণীত আইনের প্রতিটি ধারা বাংলাদেশ ভেটেরিনারি কাউন্সিল আইন – ২০১৯ সহ রেগুলেটরি বডি হিসেবে প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের অস্থিত্ব হুমকিতে ফেলবে।
✅এর সাথে সাংঘর্ষিক এবং বিদ্যমান আইনের অনেক ধারাকে রহিত করে দেয়। ওনার উক্ত অনৈতিক উদ্যোগ গ্রহনের কারণে দেশের প্রতিটি (১৪ টি) কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে হাজার হাজার ছাত্র আন্দোলনে ফেটে পড়ে, প্রতিবাদ মিছিল, মানব বন্ধন সহ সমস্ত ক্লাস পরিক্ষা বর্জন করে।
✅ আসন্ন দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে প্রায় এক হাজার ভেটেরিনারি গ্রেজুয়েট নির্বাচনী দায়িত্ব করবেন। উক্ত অপ্রয়োজনীয় আইন প্রণয়নের ঘোষনার ফলে তাদের মাঝেও তীব্র ক্ষোভ সৃষ্টি হয়েছে এবং প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরেও ব্যাপক অস্থিতিশীল অবস্থা তৈরি হয়েছে। সেখানে প্রতিদিন অনুষ্টিত হচ্ছে প্রতিবাদ সভা। এতে করে নির্বাচনী পরিবেশ মারাত্নকভাবে বিঘ্নিত হচ্ছে। তাছাড়া জাতীয় নির্বাচনের প্রাক্কালে সরকার ও প্রশাসন নির্বাচন নিয়ে প্রচন্ড দায়বদ্ধতার সাথে কাজ করছে ও কেবল রুটিন দায়িত্ব পালন করছে, সেই মুহুর্তে এ ধরনের বিতর্কিত আইন প্রণয়নের পেছনে কোন দুরভিসন্ধি রয়েছে কিনা তা খতিয়ে দেখা দরকার। আইন প্রণয়নের ন্যায় নীতিনির্ধারণী সিদ্ধান্ত এই নিররাবচনকালীন সময়ে মন্ত্রণালয়ের এখতিয়ার ভুক্ত কিনা তাও বিবেচনার দাবী রাখে।